পেঁয়াজ রফতানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার খবর প্রকাশের পর থেকে ক্ষণে ক্ষণে বাড়তে থাকে পণ্যটির দাম। এক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম হয়েছে দ্বিগুণ। শনিবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আগের সপ্তাহের তুলনায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে করে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা।
সকাল থেকে রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, শুক্রবার রাত থেকেই পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাজারে দেশি পেঁয়াজের কমতি থাকায় ভারতীয় ও চীনা পেঁয়াজের প্রতি আগ্রহ ক্রেতাদের। যে কয়েকটি দোকানে দেশি পেঁয়াজ পাওয়া গেছে তাও দ্বিগুণের বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দেশি পেঁয়াজ ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল; যা শনিবার ২৪০ থেকে ২৬০ টাকায় বিক্রি হয়। আর আমদানি করা পেঁয়াজ শুক্রবার ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও শনিবার সকালে ১৬০ ও বিকাল গড়াতেই ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। এদিকে দাম বাড়ায় বিক্রেতারাও পেঁয়াজ বিক্রি কমিয়ে দিয়েছেন। প্রত্যেকটি দোকানে অল্পসংখ্যক পেঁয়াজ সামনে সাজিয়ে রেখেছেন।
তবে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। তারা বলছেন, ঘোষণা ছাড়াই হঠা পেঁয়াজের দাম এক লাফে দ্বিগুণ হওয়ায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো অবস্থা।
ভাটারার বাসিন্দা মো. হৃদয় বলেন, ‘গতকাল ১২০ টাকা পেঁয়াজের দাম ছিল। তবে পরে কিনবো বলে কেনা হয়নি। পরেরদিন সকালে বাজারে গিয়ে দেখি পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ।
প্রসঙ্গত, আগে প্রতিটন পেঁয়াজ ২ থেকে ৩শ মার্কিন ডলার মূল্যে ভারত রফতানি করতো। কিন্তু অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ভারতের বাজারেই পেঁয়াজের সরবরাহ কমায় দাম উর্ধ্বমুখী হয়ে উঠলে পেঁয়াজ রফতানি নিরুৎসাহিত করতে গত ২৮ অক্টোবর রফতানি মূল্য অনেকটা বাড়িয়ে একলাফে ৮০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করে ভারত। এরপর থেকে সেই মূল্যেই বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি করছিলেন আমদানিকারকরা। সম্প্রতি ভারতে আবারও বন্যা হওয়ায় এবার চার মাসের জন্য স্থগিত করেছে ভারত সরকার। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত তারা কোনও পেঁয়াজ রফতানি করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য শাখার মহাপরিচালক সন্তোষ কুমারের সই করা এক চিঠির মাধ্যমে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের নির্দেশনা জারি করে। শুক্রবার সেই সিদ্ধান্তের কথা বাংলাদেশি আমদানিকারকদের জানিয়েছেন ভারতীয় রফতানিকারকরা। এই খবরেই শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই পেঁয়াজের দাম বাড়তে থাকে।
এদিকে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, প্রতি টন পেঁয়াজের ৮০০ ডলার মূল্যে গত একমাস ভারত থেকে সাড়ে ৫০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হয়েছে। যার সর্বশেষ গত ৫ ডিসেম্বর ৫৯ মেট্রিক টন পেঁয়াজ রূপালী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান আমদানি করে। কিন্তু গত দুই দিনের ব্যবধানে ভারতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি ও দেশি পেঁয়াজের মজুত কম থাকার অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।