|| অধ্যাপক ড. আ ব ম সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী, ইবি, কুষ্টিয়া ||
আত্মবিধ্বংসী নেশার দ্রব্য হল তামাক, বিড়ি, সিগারেট, জর্দা, গুল ইত্যাদি। বলা হয়, নেশার জগতে প্রবেশের প্রথম ধাপ ধূমপান।
ইরশাদ হচ্ছে, و لا تلقوا بأيديكم إلي التهلكة তোমরা নিজেকে ধ্বংসের মধ্যে ফেলে দিও না। (সূরা আল-বাকারা:১৯৫)
আর এজন্যই রাসূলুল্লাহ স. সামান্য নেশাদার দ্রব্যও নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন। রাসূলুল্লাহ স. বলেন, كُلُّ مُسْكِرٍ خَمْرٌ وَكُلُّ خَمْرٍ حَرَامٌ সকল নেশাদার দ্রব্যই মদ আর সকল প্রকার মাদকদ্রব্য হারাম। [মুসলিম হা/৫১১৪, ৫১১৬।]
ধূমপানের কারণে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। বিশ্বে ধূমপান ও তামাকের কারণে প্রতি বছর মাদকদ্রব্য, খুন, রাহাজানি, আত্মহত্যা, সড়ক দুর্ঘটনা ও অন্যান্য কারণে মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে কয়েকগুণ বেশী মৃত্যু হয়।
ধূমপানে তামাক পুড়িয়ে তার ধোঁয়া সেবন করা হয়। তামাক সরাসরি সেবন করা হয় না। কিন্তু তামাকপাতা জর্দা-গুলখোররা তামাক সরাসরি খেয়ে ফেলে, যা ধূমপানের চেয়েও মারাত্মক ক্ষতিকর। এগুলো পরিহার না করলে ঔষধও ভালোভাবে কাজ করে না। ধূমপানের কারণে যে ধরনের মারাত্মক রোগের সম্মুখীন হতে হয় তার কয়েকটি হল-
১. নতুন ধূমপায়ীদের মধ্যে বমি বমি ভাব, হতোদ্যম, মাথা ঘোরা।
২. অল্প পরিশ্রমেই অনেক ক্লান্ত হয়ে যায়।
৩. ধূমপানের ধোঁয়ার কারণে দৃষ্টিশক্তিও হ্রাস পেতে পারে।
৪. রক্তস্বল্পতা দেখা যায়, ধীরে ধীরে কিডনী অকেজো হয়ে পড়ে।
৫. গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা থেকে আলসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৬. প্রাপ্ত বা অপ্রাপ্ত ধূমপায়ীদের যক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
৭. আবার কাঁশি থেকে হাপানি রোগ দেখা দেয়।
৮. অনেক সময় উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষ মৃত্যুর মুখেও উপনীত হ’তে পারে।
৯. ধূমপানে কারণে শারীরিক তাপ-প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। ফলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায় ।
১০. ধূমপানের ফলে যৌনশক্তি লোপ পায়।
১১. হজমশক্তি কমে যায়, ধারণক্ষমতা লোপ পায় এবং শরীর ঢিলে হয়ে যায়।
১২. ধূমপানের ফলে পাকস্থলীতে ক্ষত হয়ে যকৃৎ (খরাবৎ) শুকিয়ে যায়।
১৩. ধূমপানের জন্য অনেক সময় মস্তিষ্কে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সিগারেট এখন ফ্যাসন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি এখন মেয়েদের মধ্যেও ব্যাপক প্রসার লাভ করছে। ছবিতে যে মেয়েটির ছবি দেখা যাচ্ছে সে আপনার আমার সন্তান।
দেশের বেকারত্ব দেরিতে বিয়ে হতাশা ইত্যাদি আছে আমাদের যুবসমাজ ছাড়াও যুবতী সমাজকে গ্রাস করে ফেলছে।
তাই আসুন আমরা আমাদের অনগত ভবিষ্যৎকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে এখনি পদক্ষেপ গ্রহণ করি।
লেখক: অধ্যাপক, আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ এবং সাবেক ডিন, থিওলজী এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।