মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানি এবং ব্যক্তিকে বর্জনের ডাক দিয়ে বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনিপন্থী শিক্ষার্থীরা। নিউইয়র্কে অবস্থিত কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে ক্যাম্প করে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ করে আসছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের এ বিক্ষোভ বন্ধে আল্টিমেটাম দেয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা আল্টিমেটাম প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে সরে না যাওয়ায় তাদের বহিষ্কার করছে নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাস ছেড়ে যাওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সময় দুপুর ২ টার মধ্যে শিবির ছেড়ে না গেলে বরখাস্তের মুখে পড়তে হবে বলেও আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
তবে সময়সীমা শেষ হলেও শিক্ষার্থীরা ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তাদের আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, বিক্ষোভকারীরা তাদের নির্দেশনা উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা মাস্ক এবং উজ্জল টপস পরিধান করে মানবপ্রাচীর তৈরি করেছে। যাতে পুলিশ তাদের তাবু ভেঙে দিতে না পারে।
এর আগে, বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে নেয়নি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর সঙ্গে কর্মকর্তাদের আলোচনাও ফলপ্রসূ হয়নি।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট নেমাত মিনুশে শফিক বলেছেন, ফিলিস্তিনপস্থি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আইভি লিগ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভের জন্য স্থাপন করা তাঁবু শিবির উঠিয়ে নেওয়া নিয়ে নেতৃবৃন্দের কয়েকদিনের আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর জন্য সহায়ক সম্পদ বর্জন করবে না। তবে গাজায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব রাখছে।
কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তাদের তিনটি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ম্যানহাটন ক্যাম্পাসের শিবিরে অবস্থান করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে।
এই তিন দাবি হচ্ছে— ইসরায়েল-সংশ্লিষ্টতা বর্জন, কলম্বিয়ার অর্থায়নে স্বচ্ছতা এবং বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষমা করা।
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ যুক্তরাষ্ট্রের বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজায় ইসরায়েলি হামলা বন্ধে শিক্ষার্থীরা ব্যাপক বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এ হামলায় ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে এ অঞ্চলটি এখন দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে।
এদিকে, অস্টিনে অবস্থিত টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে বিক্ষোভ করায় বহু শিক্ষার্থীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সূত্র: বিবিসি