সোমবার, জুন ২৩

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে ন্যাশনাল সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত

বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষ্যে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে দুই দিনব্যাপী ন্যাশনাল সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ (সিথ্রিইআর) এর আয়োজনে ৫-৬ জুন ২০২৪ ‘ইয়ুথ এনগেজমেন্ট টুওয়ার্ডস দ্য গ্রিনার ফিউচার’ শীর্ষক এই সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আলোচনা, সহযোগিতা এবং কর্মপরিকল্পনা গ্রহণকে উৎসাহিত করতে এই সিম্পোজিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি শিক্ষাদান, গবেষণা এবং সমাজের কল্যাণে নিবেদিত। বিশ্ববিদ্যালয়টির সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং টেকসই উন্নয়ন কৌশলসমূহকে ত্বরান্বিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এই সিম্পোজিয়ামের লক্ষ্য ছিল পরিবেশ সংরক্ষণে যুবকদের ক্ষমতায়িত করা ও তাদের সম্পৃক্ত করা। সেই সাথে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উদ্ভাবনী সমাধান এবং সক্রিয় অংশগ্রহণকে উদ্বুদ্ধ করাও এই সিম্পোজিয়াম আয়োজনের আরেকটি উদ্দেশ্য।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির এক্সিবিশন গ্যালারিতে এই সিম্পোজিয়ামের উদ্বোধন করেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর মোহাম্মদ মাহবুব রহমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক এবং সাংবাদিক আনিসুল হক। বিভিন্ন সেক্টরের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এতে পরিবেশ সংরক্ষণে যুব সমাজের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন আলোচকবৃন্দ।

সিম্পোজিয়ামের প্রথম দিনের বিভিন্ন সেশনে পরিবেশ সংরক্ষণে যুব সমাজের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে অংশগ্রহণকারীরা তাদের বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং সমস্যার সমাধানে ধারণা প্রদান করে আলোচনাকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলেন। এই সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এনভায়রনমেন্ট ক্লাবের যাত্রা শুরু হয়েছে। এই ক্লাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

সিম্পোজিয়ামের দ্বিতীয় দিন ‘জার্নি অফ ইয়ুথ টুওয়ার্ড সাস্টেইনেবল বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচকবৃন্দ পরিবেশগত সমস্যা মোকাবেলায় তাদের প্রচেষ্টা এবং অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন, সেই সাথে তারা তারুণ্যনির্ভর উদ্ভাবনের ইতিবাচক সম্ভাবনাগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। এদিন সিম্পোজিয়ামের একটি উল্লেখযোগ্য সেশন ছিল “শান্তিপূর্ণ জীবন, মানসিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম।

‘ইনোভেটিভ প্রজেক্ট আইডিয়া পিচিং’ সেশনে পরিবেশ নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী শিক্ষার্থীবৃন্দ পরিবেশ সংরক্ষণে বিভিন্ন ধারণা তুলে ধরেন। উপস্থাপনা শেষে বিশেষজ্ঞ বিচারকবৃন্দ তাদের মূল্যবান মতামত প্রদান করেন। সেরা তিনটি প্রজেক্টকে পুরস্কৃত করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আসিফ সালেহ এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ইমেরিটাস এবং সিথ্রিইআরের অ্যাডভাইজার প্রফেসর আইনুন নিশাত। অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য দেন প্রফেসর মোহাম্মদ মাহবুব রহমান।

আসিফ সালেহ বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ। জলবায়ুর এই পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে আমাদের আরো বেশি উদ্ভাবনী হতে হবে। ক্লাইমেট জাস্টিসের জন্য বিশ্ব পরিসরে আলাপ আলোচনা হলেও কর্ম পরিকল্পনাটা আসতে হবে স্থানীয় পর্যায় থেকেই এবং সেগুলো হতে হবে সহজ এবং সাশ্রয়ী যাতে এগুলোকে নিয়ে বৃহৎ পরিসরে কাজ করা যায়।’

ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষই পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে অসচেতন। মানুষকে সচেতন এবং সম্পৃক্ত করতে আমাদের আরো বেশি সচেতনতা কর্মসূচী হাতে নিতে হবে।’

দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে টেকসই উদ্ভাবন এবং সমাধানগুলি তুলে ধরতে চিত্র প্রদর্শনী এবং পরিবেশবান্ধব বিভিন্ন পণ্য প্রদর্শন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *