
|| মোঃ আখতার হোসেন হিরন | সলঙ্গা (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ||
সিরাজগঞ্জে সলঙ্গায় পাটের হারানো ঐতিহ্য আবারও ফিরে পেয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে পাটের ভালো দাম পেয়ে এ অঞ্চলের কৃষকরা আবারো পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ইতিমধ্যেই সলঙ্গা হাটে নতুন পাট বেচা কেনা শুরু হয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি সোমবার ভোর রাত (ফজরের আগ) থেকেই ক্রেতা-বিক্রেতা এসে সঙ্গে সঙ্গে কেনাবেচা শুরু করে দেয় সলঙ্গা বাজারের মাদ্রাসা মোড়ে এবং সকাল ৬/৭ টার আগেই পাট বেচা কেনা শেষ হয়ে যায়।
রায়গঞ্জ তাড়াশ ও উল্লাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কৃষক সোনালী আঁশ পাট বিক্রী করতে আসে এ হাটে।
সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর জেলার আশপাশের পাট ব্যবসায়ীরা এই হাটে পাট কিনতে আসেন। বর্তমানে বাজারে পাটের ভালো দাম থাকায় উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।
বিক্রি উপযোগী সোনালী আঁশ আশপাশ উপজেলার জমিতে পাট উৎপাদন ভালো হওয়ায় কৃষক ও ক্রেতাদের হাঁক ডাকে জমে উঠে ভোরের হাটে পাট বেচাকেনা। প্রতি মণ পাট জাত ও মানভেদে তিন থেকে চার হাজার টাকা বেচা কেনা হচ্ছে।
গত বছরের চেয়ে এ বছর বেড়েছে চাহিদা ও দাম। মণ প্রতি পাট বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকায়। এতে উৎপাদন খরচ পুষিয়ে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা। হাটের ক্রেতা-বিক্রেতা ও কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এ সব তথ্য।
উল্লাপাড়া থেকে পাট কিনতে আসা জাহিদুল ইসলাম জানান, প্রতিহাটে তিনি ৩০/৪০ মণ পাট সলঙ্গা হাট থেকে ক্রয় করেন। চৌবিলা গ্রামের কৃষক বাবু বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলাম ফলন ভালো হয়েছে, বিক্রি করে বেশ দাম পেয়েছি আলহামদুলিল্লাহ।
হাটের ইজারাদার মতিয়ার রহমান সরকার বলেন, এ হাটে সলঙ্গার বাইরে বিভিন্ন উপজেলা থেকে পাট ক্রয়-বিক্রয় করতে পাইকাররা আসে। এবারের পাটের দাম ভালো থাকায় কৃষকরাও অনেক খুশি।
রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমিনুল ইসলাম জানান, এ বছর বন্যায় পাটের তেমন ক্ষতি হয়নি। এই উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাটের জাত ও মানভেদে ৩ হাজার থেকে ৪ হাজার টাকা মন বিক্রী হচ্ছে। প্রতি হেক্টরে প্রায় ১.৫ মেট্রিক টন পাটের উৎপাদন হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, উপজেলার পাটের হাট হিসেবে সলঙ্গা বাজার পাটের হাট অনেক আগে থেকেই পরিচিত পেয়েছে। সপ্তাহে প্রতি সোমবার ভোর রাত থেকে এই হাট বসে এবং বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এখানে পাট কিনতে আসে।