|| প্রফেসর ড. আ ব ম সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী ||
বাংলাদেশের মুসলমানগণ নিঃসন্দেহে ধর্মপ্রাণ। মানুক বা না মানুক ধর্মের প্রতি তাদের টান আজন্ম। নিজে নামাজ রোজা না করলেও তার সন্তানরা নামাজ রোজা করুক, ধর্মপ্রাণ হোক, পুত্রবধু নামাজী হোক, এটা এখন দেশের অধিকাংশ মুসলিমের প্রাণের দাবি ।
বর্তমানে স্কুল হতে ধর্মীয় শিক্ষা বলতে গেলে বিদায় নিতে যাচ্ছে। নামকা ওয়াস্তে ইসলামী শিক্ষা আছে কিন্তু এর কোন কেন্দ্রীয় পরীক্ষা নেই। তার মানে এর কোন গুরুত্ব নেই।
তাই গ্রামের মুসলিমগণ এখন মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতি কি পরিমান ঝুঁকে গেছে সেটা মাদ্রাসা শিক্ষার্থী দেখলেই বোঝা যায়। বিশেষত ছাত্রীবৃদ্ধি কোথাও কোথাও ছাত্রের চাইতে দ্বিগুণ।
অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান আছেন যারা মেয়েদেরকে শিক্ষিত করতে চান । তবে যে শিক্ষা ধর্মের থেকে দূরে ঠেলে দিবে নগ্নপনা বেহায়া শিক্ষা দেবে এ ধরনের শিক্ষা গ্রামের মুসলিমগণ মেনে নিতে পারেন না।
এটা শত সিদ্ধ কথা যে, ধর্ম এবং ধর্ম পালনে যখন বাধা আসবে, মানুষ ধর্মের প্রতি তখন তত আগ্রহী হয়ে উঠবে। বর্তমানে বাস্তবতা কিন্তু তাই দেখা যাচ্ছে।
স্কুলগুলোতে ছাত্রছাত্রী হ্রাস এবং মাদ্রাসাগুলোতে ছাত্র-ছাত্রী বৃদ্ধির কারণে স্কুল কর্তৃপক্ষ এখন শংকিত হয়ে পড়ছেন।
কেজি স্কুল এবং ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলোতে ধর্মীয় শিক্ষার প্রভাব কম থাকায় এবং সেগুলো সকালে হওয়ায় বর্তমানে আমাদের সন্তানরা মক্তবে যেতে পারছে না বিধায় কুরআন শিক্ষা থেকে তারা দূরে সরে যাচ্ছে।
নূরানী শিক্ষা পদ্ধতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য একটি উপযুক্ত যুগ উপযোগী পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে বিশুদ্ধভাবে কুরআন শিক্ষা লাভ করা যায় বিধায় দিন দিন এর শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ফ্রি বই-পুস্তক এবং খাবার বিতরণ করেও আশানুরূপ ছাত্র-ছাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না।
তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখন নূরানী শিক্ষা পদ্ধতি চালুর ব্যাপারে পরামর্শ এসেছে খুদ সরকারি কোন কোন মহল থেকে। এ ব্যাপারে সরকারের ইতিবাচক ভূমিকাকে আমি সাধুবাদ জানাই।
বর্তমানে ইবতেদায়ী মাদ্রাসা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নূরানী পদ্ধতি চালু সময়ের দাবি। এতে শিশুরা শৈশবেই কুরআনের সঠিক শিক্ষা এবং জ্ঞান লাভ করতে পারবে। আমাদের সন্তানগণ নৈতিকতা শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠবে। আর দেশ জাতিও একজন ভবিষ্যৎ সুনাগরিক পাবে।
লেখক: অধ্যাপক, আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি), কুষ্টিয়া।