শনিবার, ডিসেম্বর ১৪

মৃত্যুর আগের দিনও মজা করেন নাভালনি, ছিলেন চনমনে

সদ্য প্রয়াত রাশিয়ার কারাবন্দী বিরোধীদলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনিকে শেষবারের মতো টেলিভিশনের পর্দায় হাসিমুখে দেখে গেছে। নিজের অর্থ ফুরিয়ে যাওয়া এবং বিচারকের বেতন নিয়ে মজা করছিলেন তিনি।

গত বৃহস্পতিবার শেষবারের মতো টিভির পর্দায় দেখা যায় নাভালনিকে। সেদিন তিনি কারাকক্ষ থেকে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে আদালতে সাক্ষ্য দেন। পরনে ছিল কয়েদির পোশাক। তাঁকে তখন সুস্থ ও উৎফুল্ল দেখাচ্ছিল। ভিডিওতে আদালতের কর্মকর্তাদের দেখেও মনে হয়েছে, তাঁরা যুক্তিতর্ক উপভোগ করছেন।

এর এক দিন পরই রাশিয়ার কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, ৪৭ বছর বয়সী নাভালনি মারা গেছেন। মৃত্যুর আগে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন।

নাভালনি এক দশকের বেশি সময় ধরে রাশিয়ায় বিরোধী নেতা হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছিলেন।

হাস্যরসের জন্য পরিচিত ছিলেন নাভালনি। গত বৃহস্পতিবারের শুনানিতেও তাঁকে চিরচেনা এ রূপেই দেখা যায়।

নাভালনি আদালতকে বলেন, ‘মহামান্য, আমি আপনার কাছে আমার ব্যক্তিগত (ব্যাংক) অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠাব, যেন আপনি ফেডারেল বিচারপতি হিসেবে পাওয়া বড় অঙ্কের বেতন দিয়ে অ্যাকাউন্টটিকে “চাঙা” করে তুলতে পারেন। কারণ, আমার অর্থ ফুরিয়ে যাচ্ছে।’

অনলাইন সংবাদমাধ্যম এসওটিএর প্রতিবেদনে বলা হয়, এক কারা কর্মকর্তা নাভালনির কলম বাজেয়াপ্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। এ নিয়ে ওই কর্মকর্তার সঙ্গে তাঁর ‘কথা-কাটাকাটির’ পর আদালতের ওই অধিবেশন আহ্বান করা হয়েছিল।

বৃহস্পতিবার রাতে নাভালনি লিখেছেন, তাঁকে ১৫ দিনের জন্য নির্জন কারাবাসে পাঠানো হয়েছে।

২০২১ সালের জানুয়ারিতে নাভালনি প্রথমবারের মতো কারাগারে যান। তখন থেকে তাঁকে ঘন ঘনই নির্জন কারাবাসে পাঠানো হয়েছে। রাশিয়ার কারাব্যবস্থায় বিধিভঙ্গকারীদের এমন সাজা দেওয়া হয়ে থাকে। গত বছরের শেষ দিকে তাঁকে উত্তর সাইবেরিয়ার ইয়ামাল-নেনেটস অঞ্চলের কারা কলোনিতে নেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবারের শুনানি শেষে নাভালনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘ইয়ামাল কারা কর্তৃপক্ষ ভ্লাদিমিরের প্রতি আনুগত্য এবং মস্কো কর্তৃপক্ষকে তুষ্ট করার রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে। এইমাত্র তারা আমাকে ১৫ দিনের নির্জন কারাবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। তাদের সঙ্গে আমি দুই মাসেরও কম সময় ধরে আছি। আর এর মধ্যে আমাকে চতুর্থবারের মতো নির্জন কারাবাসে পাঠানো হয়েছে।’

এটিই ছিল নাভালনির লেখা শেষ বার্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *