বিক্ষোভ সমাবেশে ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, অবিলম্বে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করতে হবে। ইতিমধ্যে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় অবৈধ দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলায় কয়েক শত শত ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত ও কয়েক হাজার নাগরিক আহত এবং হাজার হাজার স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। হাজার হাজার নাগরিক তাদের বাড়িঘর থেকে বের হয়ে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে। ইসরায়েলি বাহিনী নিষ্ঠুর ও নির্দয়ভাবে বোম্বিং করেই চলছে। ফিলিস্তিনিদের অপরাধ তারা মুসলমান এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা চায়। আরব বিশ্বের ক্যান্সার প্রতিষ্ঠিত ইসরায়েল উড়ে এসে জুড়ে বসে একটি স্বাধীন দেশ ও জাতিকে যুগের পর যুগ ধরে পরাধীন করে রেখেছে। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা দিতে হবে। এটা তাদের মৌলিক অধিকার। ফিলিস্তিনিদের কান্না আর সহ্য হয় না। বিশ্ববাসী কেন কেন ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলে না! আর কতকাল বিশ্ব মোড়লরা বোবা শয়তান এর ভূমিকা পালন করবে? বিশ্ব মুসলমানের প্রতি আহ্বান, উঠুন জাগুন প্রতিবাদে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সমস্যার সমাধান মর্মে ঐক্যবদ্ধ হন। আজ বাদ জুমআ বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে ইসলামী ঐক্য আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এসবকথা বলেন।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন, আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল অধ্যাপক মোস্তফা তারেকুল হাসান। সংগঠনের ঢাকা মহানগরীর নায়েবে আমীর মাওলানা ফারুক আহমদের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য মাওলানা আনোয়ার হোসাইন, ঢাকা মহানগর এর নায়েবে আমীর মাওলানা কবি মুহাম্মাদ ওবায়দুল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোঃ আবু বকর সিদ্দিক, যুগ্ম সম্পাদক হাফেজ মাওলানা হযরত আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক জনাব এফএম আলী হায়দার, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আজমল হোসেন, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশক্তির কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ আব্দুল খালেকসহ প্রমুখ।
প্রধান বক্তা মোস্তফা তারেকুল হাসান বলেন, এই হামলা ও চলমান সহিংসতার জন্য ইসরায়েল একাই দায়ী। অনতিবিলম্বে এ আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের মানবিক সাহায্য দেয়ার জন্য জাতিসংঘসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে দ্রুতকার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশ্ববাসীর কাছে এ কথা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে, স্বাধীন-সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ফিলিস্তিন সমস্যার কোনো সমাধান হবে না। তাই অবিলম্বে ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ীভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ওআইসি, জাতিসঙ্ঘ, শান্তিকামী বিশ্ববাসী ও মুসলিম দেশগুলোকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন,অবৈধ দখলদার দস্যু ইজরাইলী বাহিনী ১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনের নিরীহ মুসলমানদের বসত বাড়ি ও ভূমি জবর দখল করে তাদের ওপর অমানবিক, নির্মম-নৃশংস জুলুম-নির্যাতন ও দখলদারিত্ব চালিয়ে আসছে। দীর্ঘ ৭৫ বছর ধরে চালাচ্ছে বর্বর গণহত্যা ও সন্ত্রাস । জাতিসঙ্ঘসহ সব আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইসরায়েলিরা অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক আইনকানুন, রীতিনীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করে আসছে। আর জাতিসঙ্ঘসহ আন্তর্জাতিক বিশ্ব সংস্থাগুলো দখলদার ইসরায়েলি হায়নার আগ্রাসন থামাতে বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে। উপরন্তু আমেরিকা, ইউরোপসহ তথাকথিত মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের ধ্বজাধারী বিশ্বের সুপার পাওয়ার দেশগুলো নির্লজ্জভাবে অস্ত্র দিয়ে, অর্থ দিয়ে, কূটনৈতিক সাহায্য দিয়ে ইসরায়েলি বাহিনীর এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সমর্থন যোগিয়ে টিকিয়ে রেখেছে। অথচ তারাই আবার কথায় কথায় বিশ্ববাসীকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, মানবাধিকারের পক্ষে জ্ঞান দেয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ইসরায়েল বিশ্বের জন্য এক বিষফোঁড়া। তাই বিশ্বের সকল শান্তিকামী দেশ, সংস্থা-সংঘ ও জনগণের উচিৎ ঐক্যবদ্ধভাবে এই বিষফোঁড়ার মূলোৎপাটন করা।তাই,ওআইসি, আরবলীগ, সৌদী আরব, কাতার, কুয়েত, আরব আমিরাত, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের সকল মুসলিম দেশ ও নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ইজরাইলী হায়েনাদের রুখে দিয়ে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।