|| মো. আব্দুল বাকী, নারায়ণগঞ্জ ||
টোকাই ছেলেটির বয়স নয় কি দশ। ছিপ ছিপে বেশ লম্বা গড়নের চেহারা। গাঁয়ে ময়লা যুক্ত। বাবা-মার আদর কখনোই যে ছেলেটি পায়নি, তা তার মুখ দেখেই বুঝা যায়।
আমি কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, তোমার নাম কি? তোমার মা-বাবা নেই? উত্তরে ছেলেটি বলল, নাম সম্রাট, বাবা-মা থেকেও নেই। ও ময়লার বস্তার উপর হেলান দিয়ে আয়েশের ভঙ্গিতে বলল।
আবার জিজ্ঞেস করলাম, তুমি কি ডান্ডি নেশা করো? সে বলল না, তয় মাঝে মধ্যেই বন্ধুদের পাল্লায় পোইরা নেশা করি। আবার বললাম, তোমাকে দেখেই কুকুর ঘেউ ঘেউ করে উঠল, তোমার ভয় করে না? কুকুর তোমাকে ধমক দেয়, খারাপ লাগে না? সে বলে, কুকুরের সাথে রাত্রি যাপন করি, ডর ভয় নাই।
আমাদের চারপাশে কত যে ছিন্নমূল শিশু রয়েছে, তার হিসাব নেই। রাষ্ট্র আজ নির্বিকার নিজেদের পেট ভরে না, ছিন্নমূলের খবর নিবে কখন! এক শ্রেণির চতুর মানবরূপী পশু এই পথশিশুদের দ্বারা এহেন খারাপ কাজ নেই যে এরা করায় না।
আমি আবার ছেলেটিকে বললাম, তোমাকে আমি সহযোগিতা করতে চাই, তুমি এ কাজ ছেড়ে দাও। ছেলেটি বলল, আমাকে কেউ কাজ দিবে না। কারণ, আমি নেশা করি।
ওর জন্য কিছুই করতে পারলাম না। ব্যথা নিয়েই ফিরে আসলাম।
লেখক: চাকুরীজীবী, নারায়ণগঞ্জ।