দরিদ্র ভ্যানচালক আজগার আলীকে এখন সবাই সম্মান ও শ্রদ্ধা করেন। তাঁর ছেলে আমানুল্লাহ হোসাইন এবার সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়েছেন। গ্রামের একজনের কাছ থেকে সুদে টাকা ধার করে ছেলেকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি করেছেন। কিন্তু তাঁর পড়াশোনার খরচ কীভাবে জোগাড় করবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।
আজগার আলীর বাড়ি পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা গয়েশবাড়ি গ্রামে। তাঁর ছেলে আমানুল্লাহ হোসাইন এবার মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ৭১ দশমিক ৫ (মেধাতালিকায় ২ হাজার ৫৯৩তম) নম্বর পেয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ইতিমধ্যে তিনি ভর্তি হয়ে গেছেন।
জানা যায়, ছোট বসতভিটায় টিনশেড ঘর দরিদ্র ভ্যানচালক আজগার আলীর। ঘরের বেড়াও টিনের তৈরি। আজগার আলী গেঁটে বাতে আক্রান্ত। শরীরে তীব্র ব্যথা থাকায় বেশিক্ষণ ভ্যান চালাতে পারেন না তিনি। ভ্যান চালিয়ে দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় করেন। তাঁর ওষুধ কিনতেই দিনে ৭০ থেকে ৮০ টাকা খরচ হয়। বাকি টাকায় ঠিকমতো সংসার চলে না। এর মধ্যেও দুই সন্তানকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। ছোট মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। এই অবস্থায় সংসার চালানোসহ ছেলের লেখাপড়ার খরচ কোথা থেকে জোগাড় করবেন, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।
বাবার কষ্ট দূর করতে চিকিৎসক হতে চান আমানুল্লাহ। ভবিষ্যতে তাঁর বাবার মতো দরিদ্র ব্যক্তিদের বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিতে চান তিনি। আমানুল্লাহ বলেন, ‘বাবা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে ভ্যান চালান। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। শুধু আমাদের দুই ভাইবোনকে মানুষ করার জন্য বাবা এত কষ্ট করে যাচ্ছেন। আগে বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করতাম। সেই খরচ জোগাতেই বাবার কষ্ট হতো। এখন তো সেই ম্যালা দূর কুমিল্লায় গিয়ে পড়ালেখা করতে হবে। মাসে নাকি কম করে হলেও আট থেকে নয় হাজার টাকা খরচ লাগবে। এত টাকা বাবা কোথা থেকে জোগাড় করবেন, সেই চিন্তায় মনটা খারাপ হয়ে থাকে।’