শনিবার, অক্টোবর ১১

সাংবাদিক রাহনুমার সুরতহাল প্রতিবেদনে যা জানা গেল

রাজধানীর হাতিরঝিল লেক থেকে উদ্ধার করা হয় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল গাজী টিভির সাংবাদিক রাহনুমা সারাহ-র মরদেহ। পানিতে ভাসমান তার নিথর দেহটি মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাত পৌনে ২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাংবাদিক রাহনুমার এই অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে সাংবাদিক, পুলিশসহ নানা মহলে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্যের। তার মৃত্যুর কারণ জানতে অপেক্ষা করা হচ্ছে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের।

বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকেলে হাতিরঝিল থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) ও এ ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানিয়েছেন, পারুল রায় নামের এক নারী পুলিশ কর্মকর্তার মাধ্যমে রাহনুমা সারাহর সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে।

সুরতহাল প্রতিবেদনে তিনি লিখেছেন, সারাহ রাহানুমার শরীরের কোনো অংশে দাগ বা আঁচড়ের চিহ্ন নেই। চুল, কপাল ও মুখ স্বাভাবিক। তবে, নাক দিয়ে তরল নির্গত হচ্ছে। হাতের আঙুলের নখগুলো নীল বর্ণের দেখা যায়।

মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সুরতহালে বলা হয়েছে, রাহনুমার সারাহর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ও উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ জানা যায়নি। তবে, এটা জানা গেছে, সারাহ অচেতন অবস্থায় হাতিরঝিল লেকের মধ্যে ভাসছিল। তার শরীরে বাহ্যিক কোনো আঘাত বা আঁচড় নেই। কোনো যৌন নিপীড়নের চিহ্নও পাওয়া যায়নি। ফলে, মৃত্যুর কারণ জানতে ময়নাতদন্তসহ অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হলো।

তদন্তকারী কর্মকর্তা মাসুদর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তবে, মৃত্যুর কারণ চূড়ান্তভাবে জানা যাবে ময়নাতদন্তের পর।

মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, মৃত্যুর আগে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন রাহনুমা। তাতে ফাহিম ফয়সাল নামে তার এক বন্ধুকে ট্যাগ করে কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন। যেখানে ছবিতে ফাহিমও রয়েছেন।

ট্যাগ করা ছবির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, তোমার মতো বন্ধু থাকা খুবই ভাগ্যের ব্যাপার। আশাকরি খুব শিগগিরই তোমার স্বপ্ন পূরণ করবে। আমি জানি, আমাদের অনেক পরিকল্পনা ছিল। দুঃখের বিষয় হলো পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করতে পারলাম না। আল্লাহ তোমার জীবনের সব আশা বাস্তবায়ন করুন। লেখা শেষে তিনি দুটি ভালোবাসার ইমোজি জুড়ে দেন।

তার এক ঘণ্টা আগে আরেক পোস্টে রাহনুমা লেখেন, জীবন্মৃত হয়ে থাকার চাইতে মরে যাওয়াই ভালো।

মৃত রাহনুমা বেসরকারি চ্যানেল গাজী টিভির নিউজরুম এডিটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি কল্যাণপুরে থাকতেন বলে জানা গেছে। সারাহ নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ইসলামবাগ কৃষ্ণপুর গ্রামের বখতিয়ার শিকদারের মেয়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *