মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ২৩

সলঙ্গায় বাড়তি আয়ের আশায় যুবকেরা গড়ে তুলেছে ভ্রাম্যমাণ সিদ্ধ ডিমের দোকান

|| মোঃ আখতার হোসেন হিরন | সলঙ্গা (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ||

সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে সিদ্ধ ডিমের চাহিদা। সলঙ্গা সদরসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন হাট-বাজার, রাস্তার মোড়, হাইওয়ে হোটেলের সামনে এখন জমজমাট সিদ্ধ ডিমের বেচাকেনা। আর এই মৌসুমী বাণিজ্যে যুক্ত হয়ে বাড়তি আয় করছে অর্ধ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী, যুবক, দিনমজুর ও বয়োবৃদ্ধ।

স্থানীয় পাইকারি ডিমের দোকান সূত্রে জানা যায়, লেয়ার মুরগির ডিম স্থানীয় বাজার বা ফার্ম থেকে হালি ৩৫ টাকায় কিনে ৬০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। এতে প্রতি হালিতে ২৫ টাকার লাভ। অন্যদিকে দেশি হাঁসের ডিম ৪০ টাকা দরে সংগ্রহ করে সিদ্ধ করে ৮০থেকে ১০০ টাকা হালিতে বিক্রি করে লাভ হচ্ছে ৪০ টাকা করে। এ কারণে লেয়ার ডিমের চেয়ে দেশি হাঁস-মুরগির ডিমের কদর শীতে আরও বাড়ছে।

থানামোড়ের ডিম ব্যবসায়ী মোখতার হোসেন বলেন, “শীত শুরুর পর প্রতিদিন ১৫–২০ হালি ডিম বিক্রি করতে পারি। এতে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ হয়।”

ফলহাটার ডিম বিক্রেতা মজনু মিয়া জানান, বাড়িতে গরুর খামার পরিচালনা করে সংসার চালাই। সন্ধ্যায় বাড়তি আয়ের উৎস হিসেবে সিদ্ধ ডিমের দোকান করেছি। আলহামদুলিল্লাহ প্রতিদিন গড়ে ৫০০থেকে ৬০০ টাকা আয় করে থাকি। তবে বর্তমান হাঁসের ডিমের চাহিদা বেশি। কোন কোন দিন ২০থেকে ৩০হালি ডিম বিক্রি করতে পারি। ধনিয়াপাতা, কাচা মরিচ ও লবণের মিশ্রণ দিয়ে পরিবেশন করায় ক্রেতারা বেশি আসে।

আরেক দোকানী মাসুদ রানা জানান, আমি সকালে মৎস্য আড়তে কাজ করি। সন্ধ্যায় বাড়তি আয়ের আশায় ভাম্যমাণ সিদ্ধ ডিমের দোকান করেছি। একবেলা এ ব্যবসা করে প্রতিদিন ৩০০থেকে ৪০০ টাকা আয় করি।

মাদ্রাসা মোড়ের ডিমের দোকানী কলেজ পড়ুয়া ছাত্র নাঈম জানান, আমার এখানে অনেক বয়জেষ্ঠ্য মুরুব্বি এসে ব্যবসার কথা বলে। আমি তাঁদেরকে সকালে ডিমের খাঁচিতে ২০০/৩০০ পিচ ডিম দিয়ে গ্রামে পাঠাই। সারাদিন সেগুলো বিক্রি করে যা অবশিষ্ট থাকে সেগুলো দিন শেষে ফিরে দিয়ে যায়। তাতে একেকজন ৪০০/৫০০ টাকা লাভ করে। যা দিয়ে তাদের সংসার ভালোভাবে চলে যায়।

সিআরবিসি এলাকার স্কুল ছাত্র রাব্বি জানায়, আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি সন্ধ্যায় বাড়তি আয়ের আশায় ভ্রাম্যমাণ সিদ্ধ ডিমের দোকান করেছি। দিন শেষে ৩০০-৪০০ টাকা আয় করি। যা দিয়ে আমার পড়ালেখার খরচসহ বাড়িতে বাবামাকে কিছুটা হলেও সহযোগিতা করতে পারি।

সলঙ্গায় শীত যত বাড়ছে, সিদ্ধ ডিমের বাজারও তত জমে উঠছে, যা স্থানীয় বহু মানুষের জন্য অস্থায়ী হলেও নির্ভরযোগ্য আয়ের দ্বার খুলে দিয়েছে।

আছিয়া বছির মেডিকেল সেন্টার এর ডা. শাওন শাহরিয়ার বলেন, সিদ্ধ ডিম শীতকালে খুব উপকারী। দেশি হাঁস-মুরগির ডিমে পুষ্টিগুণ লেয়ারের চেয়ে বেশি। তবে অনেকেই বিট লবণ দিয়ে ডিম খান, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর—এটি পরিহার করা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *