শুক্রবার, নভেম্বর ২২

শোকাবহ জেলহত্যা দিবস আজ

আজ ৩ নভেম্বর, শোকাবহ জেলহত্যা দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় দিন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার পর দ্বিতীয় কলঙ্কজনক অধ্যায় এই দিনটি।

১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী ও চার জাতীয় নেতা বাংলাদেশের প্রথম সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এর আগে ১৫ আগস্টের পর এই চার জাতীয় নেতাকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।

জাতীয় এই চার নেতাকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে ঘাতকরা। কারাগারের মতো কঠোর নিরাপত্তা প্রকোষ্ঠে এ ধরনের নারকীয় হত্যাকাণ্ড পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন।

দিনটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, জাতীয় চার নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তারাই ছিলেন জাতির অতন্দ্র কান্ডারি।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু সুখী-সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নে সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখবেন-এটাই হোক জেলহত্যা দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।

অপরদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, জাতীয় চার নেতার আত্মত্যাগ বাঙালি জাতি চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি চক্র, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী এবং উন্নয়ন ও গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি এখনও নানাভাবে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী এই অপশক্তির যেকোনও অপতৎপরতা-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে সবসময় প্রস্তুত থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে বাঙালি জাতি আজ স্মরণ করছে জাতীয় চার নেতাকে। আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন নানা কর্মসূচির আয়োজন করেছে।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্য রয়েছে—শুক্রবার সূর্য ওঠার সময়ে বঙ্গবন্ধু ভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে সংগঠনের সব স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন।

সকাল সাড়ে ৭টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ। এছাড়া ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনসহ মহানগরের প্রতিটি শাখার নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।

সকাল ৮টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদ ও কারাগারে নির্মমভাবে নিহত জাতীয় নেতাদের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।

রাজশাহীতে শহীদ কামারুজ্জামানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও মোনাজাত করা হবে। বিকাল ৩টায় জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

জেলহত্যা দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদা ও শ্রদ্ধার সাথে পালনের জন্য এক বিবৃতিতে দলের সব শাখা, সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *