ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের থিওলজী এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের সাবেক ডিন প্রফেসর ড. আ ব ম সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, যাদের রক্তের বিনিময়ে আজ দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা পাওয়ায় বাংলাদেশের খ্যাতনামা একটি প্রতিষ্ঠানে মুক্ত বাতাসে বক্তব্য দিতে পারছি তাদের ঋণ কখনো পরিশোধ করা যাবে না। শহীদদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না।
মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) সকাল দশটায় কুষ্টিয়া কুয়াতুল আলিয়া মাদ্রাসার আলিম প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সবকপ্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রফেসর সিদ্দিকী বলেন, সকল ছাত্রছাত্রীকে একজন দেশ প্রেমিক আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার প্রতি আহ্বান জানাই। শুধু সার্টিফিকেট নিয়ে নিজের জন্য কিছু করতে পারাটা গৌরবের নয়। বড় বড় সার্টিফিকেট ছাড়াও দেশ জাতির সেবা করা যায়। দেশ জাতির সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করলে দেশজাতি তোমাদেরকে এগিয়ে দিবে তার জ্বলন্ত উদাহরণ আজকে তোমরা ছাত্র সমাজ।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, পিতা মাতা তোমাদের কখনো ফাঁকি দেন না। তাই তোমরাও লেখাপড়ায় ফাঁকি দিবে না। দেশ জাতির জন্য নিজেকে উজাড় করে দিবে। দেশ জাতিও তোমাদেরকে কিছু না কিছু অবশ্যই দিবে।
সাইফুল ইসলাম সিদ্দিকী আরও বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষা আজ বড় অবহেলিত সাধারণ শিক্ষার সাথে এর বৈষম্য আকাশ পাতাল তফাৎ। এ তফাত দূরীকরণ বর্তমান সরকারের সময়েই সম্ভব। মাদ্রাসায় কুরআন শুধু পড়া হয় ও তেলাওয়াত করা হয়। হাফেজদেরকে দিয়ে আমরা কুরআনখানি সফিনা রমজানে তারাবীহ পড়িয়ে দায়িত্ব শেষ করি। কিন্তু আল কুরআন তো এজন্যে অবতীর্ণ হয়নি। আল কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে বিশ্ব মানবতার কল্যাণের জন্য।
তিনি বলেন, বিশ্বের সকল জ্ঞানের উৎস হলো আল-কুরআন। আল কুরআনকে আমাদের সেভাবে অধ্যায়ন এবং গবেষণা করতে হবে। তাহলে কেবল মুসলিম জাতিকে বিশ্বে সর্বোচ্চ আসনে সমাসীন করা যাবে।
বর্তমান যুবসমাজ মোবাইল ভাইরাসে আক্রান্ত। যুব সমাজকে ধ্বংসের জন্য এর চাইতে বড় অস্ত্র আর কিছু নেই। তবে এটাও ঠিক যে, এটি বর্তমান যুগের সবচাইতে বড় উপকারী প্রয়োজনীয় একটি আবিষ্কার। এটিকে তোমরা ইতিবাচক কাজে ব্যবহার করবে নেতিবাচক কাজে নয়। মুসলিমগণ আল কুরআনে বর্ণিত জ্ঞান-বিজ্ঞানে যতদিন নিজেদেরকে উন্নত করতে না পারবে ততদিন এ জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়, বলেন প্রফেসর সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষকদের নিয়ে এক মত মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করে শিক্ষকদেরকে আপন সন্তানের মত পরিচর্যার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। প্রধান অতিথি আরো বলেন, যেহেতু মাদ্রাসা এখন শুধু কামিল মাদ্রাসা নয়, এটি স্নাতকোত্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তাই শিক্ষকদেরকে পাঠদানের পূর্বে পাঠ প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাসে গমন করতে হবে। অন্যথায় এরা দেশ জাতির সম্পদ না হয়ে বোঝা হয়ে যাবে জনগণ তাদের সন্তানদেরকে আর মাদ্রাসায় পড়াবে না। মাদ্রাসা গুলো ছাত্রশূন্য হয়ে পড়বে। তাই দেয়ালে পিঠ ঠেকার আগেই আমাদের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ জনাব মো: তারিকুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।