
|| লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ||
লোহাগাড়ায় ছাত্রলীগনেতা ও বিবাহিতদের দিয়ে বার আউলিয়া ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের কমিটি গঠনের অভিযোগ ওঠেছে। শনিবার (২৪ মে) সকালে আমিরাবাদ স্টেশনের একটি রেস্টুরেন্টের হলরুমে সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সদ্য ঘোষিত বার আউলিয়া ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বার আউলিয়া ডিগ্রী কলেজের ডিগ্রি ২য় বর্ষের ছাত্র মো: আবদুল করিম। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে কাজ করছি। বিগত ফ্যাসিবাদ সরকারের আমলে দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহন করতে গিয়ে অনেকবার পতিত সরকারের দমন-নিপীড়ন ও জেল জুলুমের শিকার হয়েছি। তবুও শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শকে বুকে ধারণ করে রাজনীতি হতে একচুলও পিছপা হইনি। জুলাইয়ের ঐতিহাসিক ছাত্রজনতার আন্দোলনে সৈরাচার সরকারের পেটোয়া বাহিনীর অস্ত্রের সামনে বুক চিতিয়ে দিয়ে দেশকে সৈরাচারমুক্ত করেছি। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে কিছু সুবিধাবাদী পতিত সরকারের দোসর ছলে-বলে কৌশলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে কলুষিত করার জন্য উঠে পরে লেগেছে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রবিউল হোসেন রবি ও সদস্য সচিব মো: কামরুদ্দীন সবুজ স্বাক্ষরিত বার আউলিয়া কলেজ ছাত্রদলের একটি কমিটি অনুমোদন দেন। কমিটিতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো: মিনহাজকে সভাপতি এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রায়হান উদ্দীন মুন্নাকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে। তারা দুইজনেই বিবাহিত। যার বেশকিছু ছবি গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ছাত্রদলের গঠনতন্ত্র অনুসারে কোনো বিবাহিত ব্যক্তি ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পারে না। তাই বিবাহিত এবং সাবকে ছাত্রলীগের নেতা দিয়ে বার আউলিয়া কলেজ ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত এই কমিটি ছাত্রদলের রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এটি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের জন্য অনেক বেশি লজ্জার এবং জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির জন্য অশনি সংকেত।
এই কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে সভাপতি পদে দেয়া মো: মিনহাজ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে দেয়া রায়হান উদ্দিন মুন্নাকে নিয়ে সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। ইতোমধ্যে তারা দুইজন সৈরাচার সরকারের সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের বিভিন্ন প্রোগ্রামে সক্রিয় অংশগ্রহনসহ তৎকালীন অনেক নেতার সাথে ছবি এমনকি ছাত্রলীগের ফরম পূরণ করছে এমন ছবিও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। একজন নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা জুবাইদ তার ফেইসবুক আইডিতে সদ্য ঘোষিত বার আউলিয়া ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের কমিটির সভাপতি মিনহাজের ছবি ব্যবহার করে অভিনন্দন দিয়ে লিখেছেন হাতে গড়া কর্মী এখন ছাত্রদলের সভাপতি। অপর আরেকটি আপডেট পেইজ নামের পেইজ থেকে লিখা হয় একজন বিবাহিত এবং সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী কিভাবে ছাত্রদলের কমিটিতে জায়গা পায়, তাও আবার সভাপতি পদে এসব দেখে লোহাগাড়া জাতীয়তাবাদী পরিবারে চলছে চাপা ক্ষোভ৷ এসব নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ইতোমধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগকে পূনর্বাসন করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করছেন অনেকে। যেই কমিটি জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে কলুষিত করছে এবং ছাত্রদলের রাজনীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে অনতিবিলম্বে এই কমিটি বাতিল করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বার আউলিয়া ডিগ্রী কলেজ ছাত্রদলের সদ্য ঘোষিত কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: গিয়াস উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: তাহাসিন,
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো: রাইহান উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল ইসলাম সামীম,ছাত্রদল নেতা যুবরাজ দেবনাথ, মো: রাইহান উদ্দীন রানা,মো: সাকিব, মো: সায়মুন, মো: ইসমাঈল, মো: কাইসার, মো: সাবিত রিজভী ও মোহাম্মদ তাসিফসহ লোহাগাড়ায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।