
|| অপু দাস | জেলা প্রতিনিধি, রাজশাহী ||
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় পুকুর খননের কাজে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে ভেকু মেশিনের নিচে ফেলে জুবায়ের (২৫) নামের এক যুবককে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে উপজেলার ধুরইল ইউনিয়নের বড় পালশা গ্রামের একটি বিলে এ হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে। নিহত জুবায়ের ওই গ্রামের রফিজের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বড় পালশা গ্রামের আব্দুল মজিদ ওরফে মঞ্জিলের ছেলে আনিসুজ্জামান রহমান বকুল, মুনতাজ হাজির ছেলে রুহুল এবং রুবেলের নেতৃত্বে ভেকু মেশিন দিয়ে পুকুর খননের কাজ চলছিল। এ সময় কৃষিজমি রক্ষার দাবিতে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি কাজে বাধা দেন। উত্তেজনার একপর্যায়ে অভিযুক্তরা ভেকু চালককে উদ্দেশ করে ‘ওদের পিষে দে’ বলে চিৎকার করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরই মধ্যে ভেকুর নিচে পড়ে গুরুতর আহত হন জুবায়ের।
স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জুবায়েরকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের পরিবার অভিযোগ করেছে, এ ঘটনার সঙ্গে ভীমনগর গ্রামের বকুল, রুহুল ও রুবেলসহ আরও কয়েকজন সরাসরি জড়িত। পরিবারের দাবি, পুকুরটি খননের সঙ্গে মোহনপুর উপজেলার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি যুক্ত থাকলেও নিরাপত্তাজনিত কারণে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে জানা যায়, নিহতের পরিবারকে ভয়ভীতি দেখিয়ে দ্রুত জুবায়েরের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ঘটনার খবর পেয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাহিমা বিনতে আখতার এবং মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মঈনুদ্দীন ঘটনাস্থল ও নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করেন।
ইউএনও ফাহিমা বিনতে আখতার বলেন, “ঘটনার সঙ্গে জড়িত ভেকু চালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।”
অপরদিকে ওসি মঈনুদ্দীন জানান, “নিহতের পরিবার শোকে ভেঙে পড়েছে। তাদের সঙ্গে কথা বলে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য থানায় আনার প্রক্রিয়া চলছে। আটক ভেকু চালকের নাম মো. আব্দুল হামিদ (২৮)।”
এ ঘটনায় এলাকায় গভীর শোক ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। নিহতের পরিবার দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
