
|| মোঃ আখতার হোসেন হিরন | সলঙ্গা (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি ||
অটো-ভ্যান, মিশু গাড়ির বডি তৈরির কারখানা করে ভাগ্য বদলিয়েছেন আরিফুল ইসলাম (৩৫) নামের যুবক।
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় চড়িয়া উজির পশ্চিম পাড়ায় হাটিকুমরুল টু সলঙ্গার আঞ্চলিক সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে এই কারখানাটি। শুধু তাই নয়, ওই কারখানায় তিনজন শ্রমিক কাজ করে তাদের সংসারে ফিরিয়েছেন স্বচ্ছলতা।
সফল উদ্যোক্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকেই সবসময় ভাবতাম পড়াশোনা করে অন্য কারও দারস্থ না হয়ে চাকুরির পিছে না ছুটে নিজে কিছু একটা করব। যেখানে বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকটের কারনে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করে আর সামনে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে আমার সৎ ইচ্ছে ও প্রবল মনোবল থেকেই ২০১৫ সালে ছোট আকারে গড়ে তুলি এই কারখানা। যার শুরুতে পা চালিত ভ্যানের বডি তৈরি করতাম। সময়ের বিবর্তনে এখন ডিজিটাল যুগে সে পা চালিত গাড়ি আর নেই বললেই চলে। এখন অটো-ভ্যান গাড়ি, মিশু গাড়িসহ কয়েক ধরনের গাড়ির বডি তৈরি করি।
আরিফুল এর বাবা আব্দুস ছালাম একজন স্বল্প আয় পরিবারের মানুষ। তাঁর কাছ থেকে অল্প কিছু পুঁজি নিয়ে শুরু করেছিলেন এই কারখানা। এরপর আরিফুল ইসলামকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এই কারখানার মাধ্যমে নিজের ভাগ্যই শুধু নয়, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন কয়েকজন শ্রমিকের। প্রতি মাসে তার এই কারখানায় তৈরি হচ্ছে ২০/২৫ টি মিশু গাড়ির বডি। তার কারখানায় তৈরি বডির সুনাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বডি তৈরি করাতে আসে গ্রাহক।
বর্তমানে তার এই কারখানায় প্রতিদিন ৩/৪ জন পুরুষ শ্রমিক কাজ করে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় কেউ গাড়িতে বডি ফিটিং করছে,কেউ গাড়িতে রং তুলি দিয়ে নান্দনিক নকশা তৈরি করে ব্যস্ত সময় পার করছে।
প্রতি মাসে এই কারখানায় তৈরি বডি বিক্রি করে আয় করেন প্রায় লাখ টাকা। আর সেখান থেকে বিদ্যুৎ বিল এবং তিনজন কর্মচারী বিল বাদ দিয়ে তার মাসিক ইনকাম হয় ৩০-৩৫ হাজার টাকা।
কারখানায় কর্মরত শ্রমিক মোতালেব হোসেন জানায়, তিনি এই কারাখানায় দীর্ঘ ৫-৬ বছর থেকে কাজ করছেন। প্রতি মাসে ১৫-২০ হাজার টাকা বেতন পান। তা দিয়ে খুব সুন্দর সংসার চলে যায়। এমনকি এই টাকা দিয়ে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার খরচ চালানো হয়। আরেক শ্রমিক সবুজ জানায়, আগে বেকার ছিলাম। আর গত কয়েক বছর থেকে এই কারখানায় কাজ করে যে বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চলে। কোন কষ্ট পোহাতে হয় না। আল্লাহ খুব ভালো রেখেছেন। কারখানার মালিক আরিফুল ইসলাম বলেন, কারখানার প্রসার ঘটাতে স্বল্পসুদে ঋণ অথবা সরকারি কোন সহযোগিতা পেলে আরও কয়েকজন শ্রমিককে প্রতিদিন কাজে লাগাতে পারতাম।
