মঙ্গলবার, আগস্ট ১৯

ভূরুঙ্গামারীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ: ২৫০ বিঘা জমিতে জলাবদ্ধতা

|| মোঃ আজিজুল হক | ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ||

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার তিলাই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ব্যাঙ্গের দোলা নামক বিলে মাছ চাষের নামে বিলের মাঝখানে ও দুটি সেতুর সামনে বাঁধ দেওয়ায় শতাধিক কৃষকের প্রায় ২৫০ বিঘা জমিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে সদ্য রোপনকৃত আমন ধানের চারা পানিতে ডুবে পচে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ভুক্তভোগীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ জানালেও কোনো সমাধান না হওয়ায় তারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কৃষি অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পশ্চিম ছাট গোপালপুর গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে জুয়েল কয়েক বছর ধরে ব্যাঙ্গের দোলা বিলে বাঁধ দিয়ে পুকুর কেটে মাছ চাষ করছেন। অন্যদিকে একই এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে রেজাউল করিম বিলের পানি প্রবাহের জন্য নির্মিত দুটি সেতুর নিচেও বাঁধ দিয়েছেন। ফলে দুধকুমার নদে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়ে এবং উজানের প্রায় ২৫০ বিঘা ফসলি জমি জলাবদ্ধ হয়ে যায়।

ভুক্তভোগী কৃষক নজির হোসেন, এনামুল, ফজলুল হক, আলম, হাসেম, আমিনুর ও রফিকুল জানান, “জমি তলিয়ে যাওয়ায় আমাদের রোপনকৃত ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হওয়ার পথে। দ্রুত প্রতিকার না পেলে আমরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ব।”

কৃষক নজির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “বাঁধ দেওয়ার কারণে আমার ৪ বিঘা জমির ধানের চারা পানির নিচে। মনে হচ্ছে এক গোছা ধানও আর বাঁচাতে পারব না। ধান না হলে পরিবার নিয়ে খাব কী?”

এ বিষয়ে মাছ চাষি জুয়েল বলেন, “এ বিলের শতকরা ৯০ ভাগ জমি আমাদের। তাই বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করছি। আগেও এলাকাবাসীকে পানি নিষ্কাশন ও জমি সংস্কারের ব্যাপারে বলেছিলাম, কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি। পাইপ বসাতে রাজি ছিলাম, কিন্তু তারা যোগাযোগ করেনি।”

তিলাই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান জানান, “ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামপুলিশ দিয়ে একাধিকবার সেতুর নিচের বাঁধ ভাঙা হয়েছে। কিন্তু পুনরায় বাঁধ দেওয়ায় ফসলি জমি জলাবদ্ধতার শিকার হচ্ছে।”

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সারোয়ার তৌহিদ বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

উপজেলা নির্বাহী অফিসার দীপ জন মিত্র জানান, “লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *