বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৯

ফিক্সড-মিল নির্ধারণ নিয়ে ইবি শিক্ষার্থীদের মারামারি; আহত ৪

|| আবির হোসেন | ইবি প্রতিনিধি ||

মেসের খাবারের ফিক্সড মিল (প্রতি মাসের আবশ্যকীয় মিল) নির্ধারণ নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সিনিয়র-জুনিয়র শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৪ অক্টোবর) রাত ১১ টার দিকে কুষ্টিয়া সদরের পিটিআই রোডের একটি মেসে এ ঘটনা ঘটে। এতে মেস মালিকসহ দু’পক্ষের অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন। আহত শিক্ষার্থীরা হলেন— ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সজীব ইসলাম এবং এনভাইরনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি বিভাগের একই শিক্ষাবর্ষের হাসিবুজ্জামান নয়ন। অপর পক্ষের আহত শিক্ষার্থী হলেন, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মনিরুল ইসলাম রোহান।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ‘গতমাসে মেসের ফিক্সড মিল ৪০ নাকি ৪৫ টি নির্ধারণ করা হয়েছে’— এ নিয়ে সিনিয়র ও জুনিয়রদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এসময় দু’পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে গালিগালাজ ও হামলার অভিযোগ তোলে। ঘটনায় সজীব ইসলাম আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। অপরদিকে রোহানের দাবি, সজীব ও নয়ন স্থানীয় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের নিয়ে এসে তাকে মারধর করে এবং কুষ্টিয়া ছাড়ার হুমকি দেয়। উভয়পক্ষই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা ও ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়েছে।

আহত শিক্ষার্থী সজীব ইসলাম অভিযোগ করেন, মিলের বিষয়ে কথা বলার সময় সিনিয়র রোহান ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে গালিগালাজ করেন। প্রতিবাদ করায় রোহান তার মুখে ও মাথায় ঘুষি মারেন এবং মাটিতে ফেলে এলোপাতাড়ি মারধর করেন। এতে তার চোখে রক্ত জমাট এবং পায়ে আঘাত লাগলে তাকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আরেক ভুক্তভোগী হাসিবুজ্জামান নয়নও একই অভিযোগ করে বলেন, রোহান তাদেরকে রুম থেকে জোর করে বের করে দেন এবং সজীবকে মারধর করেন।

অন্যদিকে মনিরুল ইসলাম রোহান দাবি করেন, খাবারের বিল নিয়ে মতবিরোধ হওয়ায় সজীব ও নয়ন তাকে মারতে আসে। কিছুক্ষণ পর তারা কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি-সেক্রেটারিসহ ২৫-৩০ জন লোক নিয়ে এসে তাকে মারধর করে কুষ্টিয়া ছাড়ার হুমকি দেয়।

মেস মালিক তুহিন জানান, সজীব আর রোহানের ধস্তাধস্তির সময় তিনি ছিলেন না। পরে বাইরে দু’পক্ষের ঝামেলা থামাতে গিয়ে তিনিও হাতে ব্যথা পান। পরে তিনি রোহানকে রুমে পাঠিয়ে সজীবকে হাসপাতালে পাঠান।

কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন, আহত সজীব ইসলামের হাত, মুখমণ্ডল ও চোখ সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে সিটি স্ক্যান ও এক্সরে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, আমি হাসপাতালে গিয়েছিলাম, তাদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভাগের সভাপতিকেও তাদের দেখভালের জন্য বলেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *