ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর দেশব্যাপী বিক্ষোভে ফেটে পড়েছেন হাজারো মানুষ। নির্বাচনকে বিতর্কিত দাবি করে এর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেন দেশটির মানুষ। বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন স্লোগান সহকারে প্রেসিডেন্টের বাসভবনের দিকে রওনা হয়।
বিক্ষোভকারীরা ফ্যালকন রাজ্যে বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর পূর্বসূরি হুগো শ্যাভেজের একটি মূর্তি ভেঙে ফেলার পরপরই দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলায় বিতর্কিত নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো জয়ের দাবি করেছেন। এর প্রতিবাদে হাজার হাজার ভেনেজুয়েলিয়ান তার প্রাসাদের উদ্দেশে রওনা হয়েছে। এ সময় তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্লোগান দেয়, ‘স্বৈরশাসকের পতন চাই’।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানীজুড়ে বিপুল পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা টিয়ার গ্যাস ছোড়েন। এমনকি, মাদুরোপন্থি আধাসামরিক গোষ্ঠীগুলোও বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে বলে জানা গেছে। দেশটির রাজধানী কারাকাসের অন্যতম দরিদ্র অংশ পেটারে এলাকায় বিক্ষোভকারীরা মাদুরোর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন।
মাদুরোর দল সমাজতান্ত্রিক পিএসইউভি টানা ২৫ বছর ধরে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির ক্ষমতায় আছে। এর মধ্যে টানা ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। এ সময়ে দেশের অর্থনৈতিক সংকট নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দেয় সাধারণ মানুষের মধ্যে।
রোববার দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে সোমবার প্রথম প্রহরে নির্বাচনের ফল ঘোষণা করে ভেনেজুয়েলার জাতীয় নির্বাচন পরিষদ (সিএনই)। এতে আনুষ্ঠানিকভাবে মাদুরোকে জয়ী ঘোষণা করা হয়।
গণনা করা ৮০ শতাংশ ভোটের মধ্যে ৫১ দশমিক ২০ শতাংশ পেয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মাদুরো আর তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধীদলীয় প্রার্থী এদমুন্দো গনসালেস পেয়েছেন ৪৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ ভোট।
সিএনই মূলত মাদুরোর অনুগতদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, এবারের নির্বাচনে ৩০ হাজার ভোটকেন্দ্রের সবকটি থেকে ট্যালি প্রকাশ করেনি। মূলত এর ফলেই নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ও জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
বিরোধীদের দাবি, তারা ভোট গণনার যে তথ্য সংগ্রহ করেছেন, তাতে মাদুরোকে পরাজিত করছেন এদমুন্দো গনসালেস। সোমবার সন্ধ্যায় একটি সংবাদ সম্মেলনে বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া করিনা মাচাদো দাবি করেছেন, তার জোট ৭০ শতাংশেরও বেশি ভোট পেয়েছে। একটি অনলাইন ডাটাবেজে এ তথ্য তালিকাভুক্তও করা হয়েছে।