সোমবার, মার্চ ১৭

বেলকুচিতে নারী নির্যাতন বন্ধ ও ন্যায়বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন

|| আল-আমিন হোসেন | স্টাফ রিপোর্টার ||

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে নারী নির্যাতন বন্ধ ও ন্যায়বিচারের দাবিতে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে মোছাঃ খুশী খাতুন নামে এক নারী। ভুক্তভোগী এই নারী ও তার সন্তান বসতবাড়ীতে ফিরতে চায়। রবিবার (১৬ মার্চ) সকালে উপজেলার বেলকুচি প্রেসক্লাবে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে এই দাবি জানানো হয়।

সম্মানিত সাংবাদিকবৃন্দ,

আমি একজন কলেজ প্রভাষক এবং জাতীয় নাগরিক কমিটির গাজীপুর মহানগর ও গাছ্য মেট্রো ধানা প্রতিনিধি। আমার বোন খুশী খাতুনকে নিয়ে আমাদের এই সংবাদ সম্মেলন। আপনারা জানেন, মাগুরার শিশু ধর্ষণ ও হত্যা কতটা সাড়া ফেলেছে আমাদের দেশে। শুধু শিশু তো নয় নারী নির্যাতন বাংলাদেশের সমাজে মারাত্মক আকার ধারণ করে আছে দীর্ঘদিন ধরে। আমরা আজ এখানে এক গুরুত্বপূর্ণ লোমহর্ষক ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে ও ন্যায়বিচারের দাবি তুলতে একত্রিত হয়েছি। গত ২১/০৮/২০২৪ তারিখে, সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানাধীন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-০১ আইনের আওতায় একটি গুরুতর মামলা (মামলা নং ১৯৯/২৪ নারী (১)) দায়ের করা হয়। মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ১১(গ)/৩০ ধারায় দায়ের করা হয়। মামলার বিবরণ দেখলে বুঝবেন, ভুক্তভোগী ও নির্যাতনের শিকার খুশী খাতুন ও তার সন্তান ইমন আলী চরম নির্যাতন ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। মামলার বাদী মোছাঃ খুশী খাতুন এবং স্বাক্ষী মোঃ ইউসুফ, হাবিবুর ইমন আলী এবং শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হাসপাতালের ডাঃ শামীমুল ইসলাম। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, প্রধান অভিযুক্ত মোঃ নাজেম আলী আকন্দ ও মোঃ আব্দুল কাদেরসহ আরও ০৪ জন ব্যক্তি এই জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িত। সাক্ষ্য-প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও মামলার অগ্রগতি অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে, যা বিচার প্রক্রিয়ার প্রতি জনগণের আস্থা হ্রাস করছে।

মূল ঘটনা ও দুইটা জিডির সংক্ষিপ্ত বিবরণ তাং ২০/০১/২০১৯; ০৯/০৭/২০২৪ ইং

মোছাঃ-খুশি খাতুন (৪৭) আমার যোন যাকে আজ থেকে ২৭ (সাতাইশ) বছর পূর্বে বিবাদী মো: নাজেম (৫৬), পিতা-দেলোয়ার হোসেন, সাং-দৌলভপুর পশ্চিমপাড়া, থানা বেলকুটি, জেলা-সিরাজগঞ্জ এর সহিত শরীয়ত মোতাবেক বিবাহ দিই। আমার বোন বিয়ের পর থেকেই নানা অত্যাচারের মধ্যে থেকেই সংসার করে আসতেছে। আমরা সেই ছোট্টবেলা থেকেই দেখে আসছি। বোনের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে আছে। এক ছেলে-এক মেয়েও বিবাহিত। তাদের ঘরেও ছেলে মেয়ে আছে। মোজ্য। খুশি খাতুনকে বিবাহ দেওয়ার পরের বছর থেকে আমার বোনকে যৌবুকের দাবী করে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে এবং আমার বোনকে আমাদের বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয় অসংখ্যবার যৌতুকের জন্য। আমার পরিবার ও বিবাদ্দিদের পরিবারসহ গণমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে অনেকবারই দরবার শালিশ করে আমার বোনকে তার স্বামীর বাড়ীতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারপরও কিছু দিন পরপর বারবার তার স্বামী ও তার মা-ভাই-বোন প্রায় সবাই মিলে আরও যৌতুকের দাবী নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করে বাবার বাড়ী পাঠিয়ে দেয়। আমরা ও আমার বাবা কিছু টাকা দিয়ে আমার অন্য দুলাভাইদের দিয়ে আমার বোনকে তার স্বামীর বাড়ীতেই পাঠিয়ে দিই। এরকম ঘটনা একাধিক বার ঘটেছে বিগত ২৭ বছরে অন্তত ৫০ বার এমনটা হয়েছে। শুধু তাই নয় নাজেমকে এনায়েতপুর মেডিকেলে চিকিৎসা করাতে আমাদের পরিবারকে ২/৩ লক্ষ দিতে বাধ্য করেছিল। এছাড়া আমার বোনকে বারবারই আমাদের বাড়ীতে নিয়ে এসে চিকিৎসা করি মারধর করার পর। বিবাদীরা কিছু গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এসে বারবার এরকম করবে না বলে দরবার শালিশের মাধ্যমে আমার বোনকে নিয়ে যায়। এরকম দীর্ঘদিনের অবস্থা দেখতে দেখতেই আমার মা স্ট্রোক করে ২০২১ সালের মার্চের ১৭ তারিখ পরলোক গমন করেন সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে।

আরও উল্লেখ্য যে, বার বার গ্রাম্য শালিশ করার পরেও তাদের নির্যাতনের মাত্রা ও যৌতুক লোভ থেকে বের হতে না পারায় গত ২০/০১/ ২০১৯ সালে আমাদের বড় ভাই মো. আল আমিন শেখ (৩৭) বেলকুচি সার্কেল অফিসে লিখিত অভিযোগ করে। অরপর বেলকুচি সার্কেল অফিস কর্তৃক ৩১ জানুয়ারি ২০১৯ সালে আমাদের বাড়ি ও আমার বোনের শশুর বাড়িতে অর অফিসে বসে মিমাংসা করার নোটিশ দেয়। সেই নোটিশের প্রেক্ষিতে পরের দিনই সার্কেল এসপি অফিসে একত্রিত হয় উভয় পক্ষই। এরকম নির্যাতন আর করবে না বলে লিখিত দেয় অত্র অফিসে।

এরপরও ২য় বিয়ে করে সন্তানদের ভিটেমাটি ছাড়া করবে বলেও হুমকি ধামকি বারংবার দিছে। আবার নাকি এই বউকে মেরে ফেলে বিয়েও করবে। স্ত্রীর ভরনপোষণ করতেও অস্বীকার করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *