শনিবার, আগস্ট ২৩

নতুন প্রজন্মের কৃষি ভাবনায় ‘পার্টনার’: প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও পুষ্টির সমন্বয়

|| আছিবুল ইসলাম | বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি ||

কৃষি শুধু খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্র নয়, এটি এখন এক বিস্তৃত সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামোর অংশ—এই বার্তা তুলে ধরেছে বরিশালের বানারীপাড়ায় অনুষ্ঠিত ‘পার্টনার ফিল্ড স্কুল কংগ্রেস’। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে আজ মঙ্গলবার (৩ জুন) উপজেলা পরিষদ হল রুমে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী এ কংগ্রেসে কৃষক, উদ্যোক্তা, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় প্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।

প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী অফিসার বায়েজিদুর রহমান বলেন, “কৃষি উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে উদ্যোক্তা সৃষ্টি, পুষ্টি সচেতনতা ও পরিবেশ সুরক্ষাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। ‘পার্টনার’ প্রকল্প এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয়ে একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করেছে।” তিনি বলেন, “প্রযুক্তি ও তথ্যভিত্তিক কৃষি চর্চার মাধ্যমে কৃষকদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে।”

বিশেষ অতিথি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফখরুল ইসলাম মৃধা বলেন, “পুষ্টিকর খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে যেমন স্বাস্থ্য সুরক্ষা হয়, তেমনি কৃষকের অর্থনৈতিক স্থিতিও মজবুত হয়। একটি সুস্থ জাতি গঠনে পুষ্টির ভূমিকা অপরিসীম।”

কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান জানান, “বছরের পর বছর আমরা খাদ্য নিরাপত্তার কথা বলেছি, এখন সময় এসেছে পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার। আর সেটি সম্ভব কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি ও সচেতনতার সঙ্গে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে।” কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা তনয় সিংহ মাঠপর্যায়ের বাস্তব অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জানান, “অনেক কৃষকই এখন নতুন জাত, জৈব সার ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য ব্যবহার করে নিজেদের চাষাবাদে বৈচিত্র্য আনছেন।”

আলোচনায় অংশ নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উপজেলা সভাপতি মাওলানা শিহাব উদ্দিন বলেন, “কৃষিকে অবশ্যই নৈতিকতা ও পরিবেশবান্ধব পথে পরিচালিত করতে হবে। জমিনের সঙ্গে মানবিকতার সম্পর্ক অটুট রাখা জরুরি।” বরিশাল জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক আব্দুস সবুর খান বলেন, “প্রণোদনা ও কৃষকের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত না হলে উন্নয়নের সুফল মাঠে পৌঁছাবে না।”

অনুষ্ঠানে বানারীপাড়া প্রেসক্লাবের সাংবাদিক, বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষক প্রতিনিধি, তরুণ উদ্যোক্তা ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনায় একাধিকবার উঠে আসে, কৃষিকে শুধুমাত্র খেত-খামারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে পুষ্টি, পরিবেশ, প্রযুক্তি ও অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।

‘পার্টনার’ প্রকল্পের মাধ্যমে এ দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে নতুন একটি দিগন্তের সূচনা হচ্ছে বলেও জানান আয়োজকরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *