
|| নিজস্ব প্রতিবেদক ||
দাওয়াতুন্নবী (সা:) উপলক্ষে “দ্বীন প্রতিষ্ঠায় রাসুল (সা:)-এর পথ ও পদ্ধতি”শীর্ষক আলোচনা সভায় ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত আমীর অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মদ এরশাদ উল্যাহ ভূঁইয়া বলেছেন, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা নামাজ রোজার মতই ফরজ ইবাদত। নামাজ রোজা হজ্ব যাকাত যেমন আল্লাহর দেওয়া ও রাসূলের দেখানো পথ-পদ্ধতি অনুযায়ী করতে হয়; ঠিক তেমনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজও আল্লাহর দেওয়া ও রাসূলের দেখানো পথেই হতে হবে। শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাদ আসর আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় মিলনায়তনে আন্দোলনের ঢাকা মহানগরীর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক মাওলানা মুহাম্মদ এরশাদ উল্যাহ ভূঁইয়া বলেন, আব্রাহাম লিংকনদের তৈরি গণতান্ত্রিক পথ-পদ্ধতি বা প্রক্রিয়ায় পৃথিবীর কোথাও দ্বীন প্রতিষ্ঠিত হয়নি। হাজারো চেষ্টা হয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে; কিন্তু সফলতার মুখ বিশ্ববাসী দেখতে পায়নি। আলজেরিয়া, তুরস্ক, মিশর, পাকিস্তান বাংলাদেশসহ বিভিন্ন জনপদে যুগের পর যুগ এই পথে চেষ্টা হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু এই পথে সফলতা সুদূর পরাহত। তাই বলতে চাই, মক্কায় রাসুল (সা:)-এর দাওয়াতি কাজ, লোক তৈরির মিশন ও বাঁধার মুখে মদিনায় হিজরত পরবর্তী মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং মক্কা বিজয়; এই এইসব দ্বীন প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন মঞ্জিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা যারা দ্বীন প্রতিষ্ঠার কথা বলি, এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি গণজাগরণ বা গণঅভুত্থান তথা ইসলামী গণবিপ্লব, দেশ ও জাতির মুক্তির একমাত্র পথ। প্রচলিত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কারো জনস্রোত বা বিজয়োল্লাস দেখে আমরা আমাদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হতে পারি না। আমাদের চিন্তা-চেতনা ও লক্ষ্য উদ্দেশ্যের উপর অটল-অবিচল থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী বিপ্লবের লক্ষ্যে সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করে যেতে হবে এবং ঘরে ঘরে ইসলামী বিপ্লবের দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে রাসুল (সা:)-এর পথ ও পদ্ধতিই মুসলিম উম্মার জন্য একমাত্র অনুসরণীয় পথ।
আলোচনায় তিনি আরও বলেন, সরকার কলেজ পর্যায় ইসলাম শিক্ষাকে চতুর্থ সাবজেক্ট (ঐচ্ছিক), এবং প্রাইমারি স্কুলের সঙ্গীতের শিক্ষক নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে এই প্রজ্ঞাপন বাতিল এবং কলেজেগুলোতেে সকল বিষয়ে ইসলাম শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক ও ইসলাম শিক্ষা সাবজেক্টের অনুমোদন ও শিক্ষক নিয়োগ এবং প্রাইমারি স্কুলে একজন করে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের আমীর জনাব মোস্তফা বশীরুল হাসান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা মুহাম্মদ রুহুল আমীন, সেক্রেটারী জেনারেল জনাব মোস্তফা তারেকুল হাসান ও অর্থ সম্পাদক মাওলানা ফারুক আহমাদ। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা দক্ষিণের নায়েবে আমীর মাওলানা আনোয়ার হোসাইন, ঢাকা উত্তরের নায়েবে আমীর মানবিক চেতনার কবি মুহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ ও নায়েবে আমীর মাওলানা মিজানুর রহমান আসলামী, ঢাকা দক্ষিণের যুগ্ন সম্পাদক হাফেজ মাওলানা হযরত আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক এফএম আলী হায়দার, ঢাকা উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কবি নুরুল হুদা, ঢাকা উত্তরের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাদের, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শক্তির কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল খালেক, বাংলাদেশ জমিয়তে তালাবায়ে আরাবিয়া ঢাকা মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাথির মুহাম্মদ ইয়াফী খান প্রমুখ। এছাড়াও মহানগরীর উত্তর-দক্ষিণের অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
শুরুতে কুরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ নাঈমুল ইসলাম, নাতে রাসুল পরিবেশন করেন মাওলানা আব্দুল কাদের এবং প্রোগ্রাম পরিচালনা করেন ঢাকা দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক।