
|| মোহাম্মদ রাজিবুল হাসান | নিজস্ব প্রতিনিধি ||
২১ তারিখ শুক্রবার বাংলাদের নরসিংদী জেলার মাধবদীতে ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার নিচে উৎপাদিত ভূমিকম্পের মাত্রা ছিলো ৫.৭। তাতেই কেঁপে উঠেছিলো ঢাকাসহ সারাদেশ। দেশ জুড়ে ব্যাপক হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশে কত মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে- তা নিয়ে আগাম পূর্বাভাস দিয়েছেন মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ভূতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুর রব।
তিনি বলেন, এখন বাংলাদেশে যেকোনো সময় ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের সম্মুখীন হতে পারে।
শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৯ মিনিটে যে ভূমিকম্প হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫.৭। অধ্যাপক আব্দুর রব বলেন, “আজকে একটা প্রলয়ংকরী ভূমিকম্প হতে বেঁচে গেলাম আমরা, আলহামদুলিল্লাহ”। বাংলাদেশ যে ভূতাত্ত্বিকগত টেকটনিক প্লেটের উপরে রয়েছে সেখানে ৭ বা ৮ রিখটার স্কেলের ভূমিকম্প হওয়া খুব স্বাভাবিক। কারণ অতীতে এই মাত্রার ভূমিকম্প হাওয়ার প্রমাণ মিলে।
তিনি বলেন, ১৮৯৭ সালে আসাম ও মেঘালয়ে যে ভূমিকম্প হয়েছিল তখন বাংলাদেশ কেঁপে উঠেছিল ৮ দশমিক ৭ মাত্রার রিখটার স্কেলে। কাছারে এটি সিলেটের উত্তরে অবস্থিত জৈন্তিয়া পাহাড় সেখানে ভূমিকম্পের ৮ মাত্রার ছিল। আরাকানে (মিয়ানমারের বর্তমান রাখাইন রাজ্যের পূর্বের নাম) যে ভূমিকম্প ছিল সেটাও ছিল ৮ দশমিক ৫ মাত্রার।
‘সুতরাং বাংলাদেশে এখন রেকারিং পিরিয়ড অর্থাৎ নিয়মিত সময় চক্র অনুযায়ী শতবর্ষ পেরিয়ে গেছে, অতএব এক শত বছর পার হয়ে গেছে লাস্ট রিখটার স্কেল থেকে’ উল্লেখ করে মি. আব্দুর বর আরও বলেন, একই ভূমিকম্প যেনো তারই বার্তা দিয়ে গেলো। তাই আমরা এখন যেকোনো সময় ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের সম্মুখীন হতে পারি। সুতরাং আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন।
এদিকে বড় ভূমিকম্পের আগাম বার্তা দিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুবাইয়াত কবিরও।
তিনি বলেন, ঢাকা এবং এর আশপাশে বিগত কয়েক দশকে সংঘটিত হওয়া ভূমিকম্পের মধ্যে এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সর্বোচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প। এ সময় দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ৪.৫ মাত্রার সামান্য বেশি ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। তবে এগুলোর উৎপত্তিস্থল ছিল দেশের বাইরে।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ঐতিহাসিকভাবে এ অঞ্চলে একাধিক বড় ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে; যা প্রমাণ করে যে, এটি ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। যেকোনো সময় বাংলাদেশে আরও বড় ভূমিকম্প হতে পারে। ঠিক কবে হবে সেটা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।
তিনি আরও বলেন, ভূমিকম্পে মহড়ার বিকল্প নেই। আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
