বৃহস্পতিবার, জুলাই ৩

দেশকে নতুনভাবে গড়তে তরুণদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে : খুবি উপাচার্য

|| শেখ শাহরিয়ার | খুলনা প্রতিনিধি ||

জুলাই আন্দোলন নিয়ে জাতিসংঘের তদন্ত প্রতিবেদন ০৩ জুলাই (বৃহস্পতিবার) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে উপস্থাপিত হয়। পরে তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর জাতিসংঘের হিউম্যান রাইট সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) এর উদ্যোগে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ রেজাউল করিম।

তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা ফিরে পেয়েছি বাক স্বাধীনতা। গত ১৭ বছরে কখনও নিজের মতামত, আবেগ, অনুভূতির কথা আমরা প্রকাশ করতে পারিনি। ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা প্রিয় মাতৃভূমিকে নতুনভাবে পেয়েছি। এজন্য জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদদের আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করি।

তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্ম জানে কীভাবে অত্যাচার, অন্যায়কে প্রতিরোধ করতে হয়। কীভাবে রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে কথা বলতে হয়। আজ আমাদের সামনে যে দেশ দাঁড়িয়ে আছে, সে দেশকে নতুনভাবে গড়তে তরুণদের ঐক্য ধরে রাখতে হবে।

উপাচার্য বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মীর মুগ্ধ’র স্মৃতি ধরে রাখতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেটের নামকরণসহ নানা উদ্যোগ বাস্তবায়িত হয়েছে এবং আগামীতে বেশকিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মেইন গেট সংলগ্ন স্থাপনাটিকে ’৫২, ’৭১ ও ’২৪ সালের শহিদদের স্মৃতিতে স্মৃতিফলক রূপে গড়ে তোলা হবে, যেখানে জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতিও স্থান পাবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মোঃ নাজমুস সাদাত। তিনি বলেন, জাতিসংঘের এই রিপোর্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যা ভবিষ্যতে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। এর ভিত্তিতে জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, জুলাই আমাদের প্রেরণা জোগায়। জুলাই নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। জুলাইয়ের মর্যাদা রক্ষা করতে হলে তরুণদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিনের প্রধান পুনম চক্রবর্তী, ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক আবুল বাশার এবং ডিভেলপমেন্ট স্টাডিজ ডিসিপ্লিনের প্রভাষক আইরিন আজহার ঊর্মি।

অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর কার্যালয়ের মানবাধিকার কর্মকর্তা মোঃ জাহিদ হোসেন জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের মূল অনুসন্ধান ও প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। শুরুতে সূচনা বক্তব্য রাখেন এইচআরএসএস-এর নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম।

শহিদ পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন জুলাই অভ্যুত্থানে শহিদ ইয়াছিনের ভাই মোঃ বাবু। এছাড়া অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট ও নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন জুলাই আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী আল শাহরিয়ার, ইংরেজি ডিসিপ্লিনের আয়মান আহাদ, নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল শাফিল এবং ব্যবসায়ী স্নিগ্ধা সুলতানা মুন্নি।

মোসাঃ জারিন তাসনিম স্বর্ণা এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী অর্পিতা। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ডিসিপ্লিনের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *