
|| কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি ||
তৃণমূলে আলোচনায় রানা, রাজা, ইউনুছ
আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুড়িগ্রাম-১ (নাগেশ্বরী-ভুরুঙ্গামারী) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের তৎপরতা ক্রমেই বাড়ছে। মাঠে-ঘাটে শুরু হয়েছে নির্বাচনী আলোচনা, চলছে হিসাব-নিকাশ—কাকে মনোনয়ন দিলে আসনটি পুনরুদ্ধার করা সম্ভব, আর কাকে দিলে পরাজয়ের ঝুঁকি বাড়বে।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম-১ আসনে বিএনপির পাঁচজন মনোনয়ন প্রত্যাশী মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। এদের মধ্যে তৃণমূল পর্যায়ে সবচেয়ে আলোচিত তিনজন হলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সাইফুর রহমান রানা, বগুড়া ও কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ডা. মোঃ ইউনুছ আলী এবং নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক সহকারী অধ্যাপক মোঃ গোলাম রসুল রাজা।
প্রবীণ নেতার প্রত্যাবর্তনের প্রত্যাশা
দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ ও অভিজ্ঞ রাজনীতিক হলেন আলহাজ্ব সাইফুর রহমান রানা। তিনি কুড়িগ্রাম-১ আসন থেকে অতীতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং দলের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি জেলা বিএনপির সদস্য। দলীয় নেতাকর্মীদের ধারণা, অভিজ্ঞতা ও তৃণমূল পর্যায়ে গ্রহণযোগ্যতার কারণে এবারও তিনিই মনোনয়ন পেতে পারেন। এরইমধ্যে তিনি নিয়মিত গণসংযোগ করছেন।
রাজশাহীর ছাত্রনেতা থেকে কুড়িগ্রামের নেতা
অপরদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা এবং নাগেশ্বরী উপজেলা বিএনপির একাধিকবার নির্বাচিত সভাপতি অধ্যাপক মোঃ গোলাম রসুল রাজাও মনোনয়ন প্রত্যাশী। বর্তমানে তিনি উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি স্থানীয়ভাবে সুপরিচিত বক্তা, সংগঠক ও জনপ্রিয় নেতা হিসেবে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।
তরুণ চিকিৎসক রাজনীতিকের অগ্রযাত্রা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী তরুণ রাজনীতিক ডা. মোঃ ইউনুছ আলী শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের সাবেক ছাত্রনেতা। বর্তমানে তিনি বগুড়া জেলা বিএনপির স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক এবং কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। ভুরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরীতে তার গণসংযোগে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বলে নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন। তরুণ ভোটারদের মধ্যে তার গ্রহণযোগ্যতাও উল্লেখযোগ্য।
ড্যাব নেতা মারুফও মাঠে
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক ডা. মোঃ মাহফুজার রহমান মারুফ। বিএনপির একজন সক্রিয় সদস্য হিসেবে তিনি ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। তিনিও মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী।
আইনজীবী বজলুর রশীদ মনোনয়ন চান, মাঠে ততটা সক্রিয় নন
মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে আলোচনায় আছেন অ্যাডভোকেট বজলুর রশীদ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক ছাত্রনেতা এবং বর্তমানে কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সদস্য ও জজ কোর্টের পিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। যদিও দলীয় সূত্রে তার মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানা গেলেও, মাঠপর্যায়ে তাকে ততটা সক্রিয়ভাবে গণসংযোগে দেখা যাচ্ছে না।
শেষ কথা
বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয়—কে পাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন? বিএনপি যদি যোগ্য, জনপ্রিয় ও সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে পারে, তাহলে কুড়িগ্রাম-১ আসন পুনরুদ্ধার করা সম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতারা।