মঙ্গলবার, মে ৬

জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা; মামলা থেকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের বাদ দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

|| বেরোবি প্রতিনিধি ||

জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও নিপীড়ন মামলায় গড়িমসি এবং ফ্যাসিবাদের দোসরদের মামলা থেকে বাদ দেওয়ার চক্রান্তের প্রতিবাদে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে৷

সোমবার (৫ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় ক্যাম্পাসে আসে।

মামলা নিয়ে টালবাহানা চলবে না চলবে না, সাঈদ -ওয়াসিম মুগ্ধ শেষ হয়নি যুদ্ধ, আমার ভাই কবরে খুনি কেন বাইরে, আপস না সংগ্রাম? সংগ্রাম সংগ্রাম, দালালি না রাজপথ? রাজপথ রাজপথ ইত্যাদি শ্লোগান দেন বিক্ষোভকারীরা।

এসময় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলা করে নয় মাস পরেও যারা বহাল তবিয়তে থাকে তারা আসলে কোন প্রশাসনকে মেইনটেইন করে তা সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানতে চায়। আন্দোলনের নয় মাস পরেও যদি স্বৈরাচারের এই দোসরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তবে প্রশাসনের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, প্রশাসন যদি সাধারণ শিক্ষার্থীকে বোকা বানিয়ে কোনোভাবে মামলা বাণিজ্য করার চেষ্টা করে বা কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করে তবে আরও একটি বিপ্লব ঘটিয়ে প্রশাসনকে যথাযথভাবে মামলা করাতে বাধ্য করা হবে।

ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক মুরসালিন মুন্না বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জুলাই বিপ্লবের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের নামে ৯ মাসেও মামলা করতে পারেনি, এটা চরম লজ্জার। আমরা চাই সকল হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের সকলের নামে মামলা করতে হবে, কারো নাম বাদ দেওয়া যাবে না। সেই সাথে যারা হামলাকারী, মামলায় আসামি, আওয়ামী লীগের দোসর তাদের প্রমোশন, প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করা যাবে না। এর ব্যতয় হলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো। প্রশাসনের টালবাহানা আর চলতে দেয়া যাবে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির সাধারণ সম্পাদক সুমন সরকার বলেন, আবু সাঈদ শহিদ হওয়ার নয় মাস পরেও আমরা সঠিক বিচার এখন পর্যন্ত পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে শুরু করে, কোর্ট-কাছারি সব জায়গায় মামলা নিয়ে টালবাহানা করা হচ্ছে। তথাকথিত কয়েকজনের নামে মামলা করে এর আগে যে মামলা হয়েছিল সেখানে মাত্র গুটিকয়েক ছাত্র-শিক্ষক এবং দুইজন কনস্টেবলকে গ্রেফতার দেখিয়ে ক্ষান্ত হয়েছেন তারা। এখন পর্যন্ত মূল আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে, তারা এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন, তারা এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন এবং প্রশাসনের পুলিশেরা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন, তারা এখনো বিভিন্ন জায়গায় ট্রান্সফার নিয়ে চাকরিতে জয়েন করে আছেন। যদি আবু সাঈদের মামলা নিয়ে টালবাহানা করা হয় তাহলে আমাদের এ আন্দোলন অতি শীঘ্রই তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলীর কাছে স্মারকলিপি দেন শিক্ষার্থীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *