বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৯

গাজায় ইতিহাসের চরম বিপর্যয় ও দুর্বিষহ অবস্হায় মুসলিম বিশ্বের হতাশাজনক ভূমিকা

গাজায় চলমান ইসরায়েলি হত্যাযজ্ঞ ও ধ্বংসযজ্ঞ একুশ শতকের সবচেয়ে প্রাণঘাতী একটি অধ্যায় এবং সবচেয়ে রক্ত ঝরানো সংঘাতগুলোর অন্যতম। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় প্রতি মাসে গড়ে প্রায় চার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। মাত্র ৩৬৫ বর্গকিলোমিটারের গাজায় ২০ লাখের কিছু বেশি মানুষের বসবাস। ২০০৭ সাল থেকে গাজার ওপর জলে-স্থলে-অন্তরিক্ষে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকারকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে।

একদিকে ভূমধ্যসাগর, তিন দিকে ইসরায়েল ও দক্ষিণ দিকে মিসরের সিনাই সীমান্ত। কড়া প্রহরাধীন এবং অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টনী দিয়ে ঘেরা গাজাকে বলা হয় পৃথিবীর বৃহত্তম উন্মুক্ত কারাগার। অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এই উপত্যকার বেশিরভাগ অধিবাসীই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, কিন্তু তাঁদের পালিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়ার জায়গাও নেই বললেই চলে। ইসরায়েলি বাহিনী কিছু নিরাপদ অঞ্চল নির্ধারণ করে দিলেও বেশিরভাগ সময় সেখানে আশ্রয় নেওয়া গাজাবাসীর অনেকেও ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা শহর ও এর আশপাশের এলাকায় পুরোদমে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ চলছে। বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজার দুর্ভিক্ষ একটি ‘মানব-সৃষ্ট বিপর্যয়।’ জাতিসংঘের ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্ল্যাসিফিকেশন (আইপিসি) জানিয়েছে, গাজার দুর্ভিক্ষকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা গেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, ৫ লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি, যার মধ্যে রয়েছে অনাহার, চরম দারিদ্র্য ও মৃত্যু।
এমনই একটি ভয়াবহ দূরাবস্থায় ৫৭টি মুসলিম দেশ থাকা সত্বেও তেমন কোন কার্যকর ভূমিকা রাখতে দেখছি না।

গাজার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। মূলত ইসরায়েলের সমুদ্র পথ অবরোধ ভেঙে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে এটি যাত্রা করেছে। তবে যাত্রার পর থেকে একের পর এক বাধার সম্মুখীন হচ্ছে এটি।গাজায় মানবিক সাহায্য নিয়ে যাওয়া নৌবহরে ইসরায়েলের হামলা এবং আটকের ঘটনার পর দেশটি থেকে ইসরায়েলের সব কূটনৈতিক প্রতিনিধি বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছেন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। অথচ মুসলিম দেশগুলো কি হাত গুটিয়ে বসে গাজার নির্মমতায় নিরব দর্শকের ভুমিকা পালন করবে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *