
আইন-নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে চলছে কার্যক্রম, প্রশাসনের নজরদারি প্রশ্নবিদ্ধ
|| কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ||
কুড়িগ্রাম জেলায় আবারও সরব হয়ে উঠেছে অনুমোদনহীন ইটভাটাগুলো। জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে চলছে এসব ভাটার কার্যক্রম। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইটভাটা দেখা যায় নাগেশ্বরী উপজেলায়।
জানা যায়, জেলার অধিকাংশ ইটভাটাই গড়ে উঠেছে পৌরসভা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, জনবসতি কিংবা বাজার এলাকার সন্নিকটে—যেখানে ইটভাটা স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ অনুযায়ী, কোনো ইটভাটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, আবাসিক এলাকা বা বাজার থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে হতে হবে। এবং পৌরসভা এলাকায় কোনোভাবেই ইটভাটা চালানো যাবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, এই আইনের তোয়াক্কা না করেই বছরের পর বছর চলছে এসব ভাটার কার্যক্রম।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও ধূলিকণায় ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। শিশু ও বয়স্কদের শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক জটিলতা দেখা দিচ্ছে। তাছাড়া এসব ভাটায় অবাধে কৃষিজমির উর্বর মাটি ব্যবহার করায় ফসল উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।
একজন স্থানীয় কৃষক জানান, “ভাটার ধোঁয়ায় ধান ও সবজি নষ্ট হয়ে যায়। বারবার অভিযোগ করেও কোনো ব্যবস্থা দেখা যায় না।”
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমের সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমেই কুড়িগ্রামের বিভিন্ন উপজেলায় অন্তত একশত টিরও বেশি ইটভাটা অনুমোদন ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের সীমিত জনবল ও সরঞ্জামের অভাবে কার্যকর তদারকি ব্যাহত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, ইটভাটা নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে আরও দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে ইটের বিকল্প ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির ব্যবহার উৎসাহিত করা না হলে কুড়িগ্রামের পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
