সোমবার, ডিসেম্বর ২২

ওসমান হাদির মৃত্যুতে ইবিতে শোক র‍্যালি ও দোয়া

|| মো. মোসাদ্দেক হোসেন | ইবি প্রতিনিধি ||

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা শোক র‍্যালিতে অংশ নিয়েছেন।

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে র‍্যালিটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে সমাবেত হয়।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমসহ শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আল্লাহ তাআলা যেন শহীদ ওসমান হাদীকে জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম দান করেন, সেজন্য আমরা সবাই তার জন্য দোয়া করব।”

প্রো-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, “আপনারা জানেন, ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরোধী ও বিপ্লবী শরিফ ওসমান হাদী গত শুক্রবারের আগের শুক্রবার গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। প্রথমে বাংলাদেশে এবং পরে বিদেশে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, জাতিকে শোক সাধনে নিমজ্জিত করে তিনি আল্লাহর রাস্তায় চলে গিয়েছেন। আল্লাহ যেন তার এ শাহাদাতকে কবুল করেন। যে চেতনা তিনি ধারণ করতেন সেই চেতনা যেন আমাদের মধ্যে চিরজাগ্রত থাকে।

মৃত ব্যক্তির প্রতি জীবিতদের মাত্র দুইটা দায়িত্ব এর বেশি নয়। একটা হচ্ছে তার জন্য দোয়া করা আর অন্যটা হচ্ছে তার রেখে যাওয়া আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করা। আমরা মনে করি এ বাংলার ১৮ কোটি মানুষ সবাই ওসমান হাদি। আমাদের মধ্যে বিপ্লবী চেতনা রয়েছে এবং ফ্যাসিষ্ট বিরোধী মনোভাব রয়েছে। এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদকে আমরা সবাই না বলি।”

উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “আজকে বাংলাদেশের সব জনগণ শহীদ ওসমান হাদীর জন্য শোকে মুহ্যমান। শহীদ ওসমান হাদি ছিলেন উচ্চকিত কন্ঠস্বর, ভারতীয় আধিপত্যবাদ, অন্যায়ের বিরুদ্ধে ও ন্যায়ের পক্ষে অনলবর্ষী ব্যক্তিত্ব। সে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতিচ্ছবি এবং উদীয় নক্ষত্র। তাকে হারিয়ে এই দেশ হারিয়ে ফেলেছে এক অমুল্য সম্পদ। সে চলে গিয়েছে কিন্তু তার রক্ত কণিকার যে স্পিড তা আমাদের মধ্যে রেখে গিয়েছে এবং লক্ষ হাদি তৈরি করেছে। আজকে এই শোক দিবসে আমরা প্রতিজ্ঞা করবো ‘আমি কে তুমি কে হাদি হাদি’। আমরা সবাই শপথ করছি, হাদির যে প্রতিশ্রুতি রেখে গেছে স্বাধীনতার সার্বভৌমত্বকে অক্ষুন্ন রেখে ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমরা সেটাকে ধরে রাখবো তাহলেই হাদির রক্তের বদলা নিতে পারব।

আমরা রাষ্ট্রের কাছে বলতে চাই তারা যেন অতি দ্রুত হাদির হত্যাকারীকে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসে। আমরা সবাই দোয়া করব যাতে তার জীবনের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয় ও তাকে শহিদী মর্যাদা দিয়ে জান্নাতের সুউচ্চ মাকাম দান করেন।”

সর্বশেষে শহীদ ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত ও জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ মাকাম কামনায় কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম আশরাফ উদ্দিন খানের নেতৃত্বে সম্মিলিত মোনাজাতের মাধ্যমে র‍্যালির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *