বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৯

ইবিতে ১৯ ‘ফ্যাসিস্ট’ শিক্ষককে শোকজ

|| আবির হোসেন | ইবি প্রতিনিধি ||

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ১৯ জন ‘ফ্যাসিস্ট’ শিক্ষকের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না এ মর্মে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে প্রশাসন। তাদের বিরুদ্ধে গত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে স্বৈরাচার হাসিনার পক্ষ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের হুমকি-ধমকি ও হয়রানির অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি। আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) দুপুরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে বিরোধীতাকারীদের চিহ্নিত করতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ১৯ জন শিক্ষককের নাম উঠে এসেছে। রবিবার আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলে শোকজ নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তালিকায় উল্লেখিত শিক্ষার্থীদের শোকজ করা হবে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিষয়ে এখনও কোনো নির্দেশনা পাইনি।

কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছে- ইলেট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান, বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. রবিউল হোসেন ও অধ্যাপক ড. বাকী বিল্লাহ বিকুল, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মিয়া রাসিদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. আক্তারুল ইসলাম জিল্লু ও সহযোগী অধ্যাপক ড. আফরোজা বানু, ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল আরফিন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন ও অধ্যাপক ড. শেলীনা নাসরীন, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবাশীষ শর্মা, আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার ও অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্মণ, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডল ও অধ্যাপক ড. শাহজাহান মন্ডল, কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জয়শ্রী সেন, আল-ফিকহ এন্ড ল’ বিভাগের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসেন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শহিদুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাজেদুল ইসলাম এবং ল’ এন্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী হাসান।

শোকজ নোটিশে উল্লেখ রয়েছে, গত জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ইবির ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি-ধমকি, ভীতি প্রদর্শন, মারমুখী আচরণ, গালাগালি, মিছিলে উষ্কানিমূলক শ্লোগান প্রদান এবং পুলিশী গ্রেফতার ও হয়রানি বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে উক্ত কর্মকান্ডে প্রত্যক্ষভাবে লিপ্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষে আগ্রাসী ভূমিকা নেওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে গত ১৬ মার্চ ৫ সদস্যদের তদন্ত কমিটি করে প্রশাসন। কমিটিকে ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে উপাচার্যের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হলেও পরবর্তীতে সময় বৃদ্ধি করে গত ১৩ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত কমিটি। যেখানে ১৯ জন শিক্ষক, ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং ৩১ জন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ রয়েছে বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *