বুধবার, ফেব্রুয়ারি ৫

স্বামীকে ফিরে পেতে ভণ্ডপীরের প্রতারণার শিকার নারী

স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের গৃহবধূ তাছলিমা খাতুন (৩০)। দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছ থেকে স্বামীকে নিজের কাছে ফেরত আনতে দারস্থ হন এক পীরের। এরপর পীরের কথামতো ৯০ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার ও এক লাখ টাকা রেখেছিলেন তার কাছে। তবে সেসব নিয়ে উধাও হয় পীর। পরে পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে গ্রেফতার করা হয় ভণ্ডপীরকে।

তাছলিমা খাতুন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নের কুমারুলী গ্রামের মৃত আ. জব্বারের মেয়ে। ২০০৬ সালে সিরাজগঞ্জের শফিকুল ইসলামের সঙ্গে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের তিন ছেলে রয়েছে।

শফিকুল ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করা অবস্থায় দুই বছর আগে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। এরপর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এতে স্বামীকে ফেরত পেতে বিভিন্ন কবিরাজের কাছে ছুটতে শুরু করেন তাছলিমা। স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের খবরে তাছলিমা মানসিকভাবে ভেঙে পড়লে ভণ্ডপীর মাছুমের (৪৫) সন্ধান দেন স্বজনরা।

মাছুমের বাড়ি নান্দাইল উপজেলার অরণ্যপাশা গ্রামে। তাছলিমাকে ভণ্ডপীর আশ্বাস দেয় তার কাছে স্বামীকে ফেরত এনে দেবে এবং ভালোভাবে সংসার করবে। তার কথায় বিশ্বাস করে স্বামীকে ফেরত পেতে ব্যাকুল হয়ে পড়েন তাছলিমা। তখন ভণ্ডপীর মাছুম শর্ত দেয়, স্বামীকে ফিরে পেতে হলে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার উপস্থাপন করতে হবে। পরে তাছলিমা তিন জোড়া স্বর্ণের দুল ও একটি স্বর্ণের হার, যার দাম প্রায় ৯০ হাজার টাকা এবং নগদ এক লাখ টাকা দেন।

ছয় মাস আগে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার দিলেও স্বামী ফেরত না আসায় চাপ দিলে উধাও হয় প্রতারক মাছুম।

বিষয়টি ভুক্তভোগী নারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে জানালে মঙ্গলবার (২৮ মে) ঈশ্বরগঞ্জের সোহাগী বাজার এলাকা থেকে আসামিকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। একই দিন ঈশ্বরগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী।

ময়মনসিংহ ডিবির ওসি ফারুক হোসেন বলেন, স্বামীকে ফেরত এনে দেওয়ার কথা বলে ভণ্ডপীর প্রতারণার মাধ্যমে নারীর কাছ থেকে ধাপে ধাপে স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা নিয়ে যায়। মঙ্গলবার তাকে গ্রেফতারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *