
||শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||
দক্ষিণাঞ্চলের মৎস্য খাত দেশের অর্থনীতি ও রপ্তানি আয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, চিংড়ি ও ইলিশ শুধু ব্যবসায়িক পণ্য নয়, এ দুটি পণ্যের সঙ্গে দেশের পরিচয় ও মানুষের জীবন-জীবিকা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এ খাতে গুণগত মানের প্রশ্নে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে খুলনা শ্রিম্প টাওয়ারে বাংলাদেশ হিমায়িত খাদ্য রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফইএ)-এর উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফরিদা আখতার বলেন, ব্যবসার প্রতিটি ধাপে সততা নিশ্চিত না হলে আন্তর্জাতিক বাজার ধরে রাখা সম্ভব নয়। চিংড়ি একটি খাদ্যপণ্য—এতে সামান্য অনিয়মও মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। জেলি পুশের মতো অনৈতিক কার্যক্রমের কারণে বৈদেশিক বাজারে বাংলাদেশ ক্ষতির মুখে পড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব অনিয়ম রোধে সরকার মনিটরিং আরও জোরদার করবে।
তিনি জানান, মৎস্য খাতের নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নারীদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। একইসঙ্গে হ্যাচারির সংখ্যা বৃদ্ধিতে নীতিগত সহায়তা দেওয়া হবে এবং আমদানিনির্ভর ফিস ফিডের পরিবর্তে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বিএফএফইএর ভাইস-প্রেসিডেন্ট শেখ কামরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিএফএফইএর প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী ও সিনিয়র ভাইস-প্রেসিডেন্ট মো. তারিকুল ইসলাম জহির। সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের পরামর্শক সৈয়দ ইসতিয়াক।
পরে সন্ধ্যায় বয়রায় মৎস্য পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ দপ্তর এবং কোয়ালিটি কন্ট্রোল ল্যাবরেটরির কর্মকর্তাদের সঙ্গে পৃথক মতবিনিময় সভায় উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ল্যাবরেটরির সততা ও পেশাদারিত্বের ওপরই দেশের রপ্তানি বাজার ও সরকারের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। মাননিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সামান্য ত্রুটিও দেশের জন্য বড় ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে তিনি সতর্ক করেন।
এর আগে উপদেষ্টা রূপসা জাবুসা টোটাল ফুড প্রসেসিং প্রাইভেট লিমিটেড ও বটিয়াঘাটার ঘাগড়ামারী এলাকার মৎস্য ঘের পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি চিংড়ি চাষিদের সঙ্গে মতবিনিময় করে মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা সম্পর্কে অবহিত হন।
