
|| ডা. আনোয়ার সাদাত ||
স্বাধীন বাংলাদেশ এদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের সংগ্রাম-সাধনা ও অপরিসীম ত্যাগের ফল। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বিতা, ন্যায়বিচার, সুশাসন, বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা, শোষণ-বঞ্চনার অবসানের লক্ষ্যে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়েছিল। অথচ এত বছর পরে এসে এখনো মানুষ এক অনিশ্চয়তার মধ্যে জীবন পার করছে। বাংলাদেশ এখনো দূর্নীতিতে পৃথিবীর শীর্ষ স্হানে অবস্থান করছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
সাধারণ জনগণের প্রশ্ন- স্বাধীনতার এত বছর পরেও কি স্বাধীনতার মূল লক্ষ্যসহ অন্যান্য লক্ষ্য অর্জিত হয়েছে? স্বাধীনতা যুদ্ধের লক্ষ্য, সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও সাম্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন কি ঘটেছে?
বর্তমান বাস্তবতা হচ্ছে, জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতা আর জনগণের কাছে নেই। তা হরণ করা হয়েছে। তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সামাজিক ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও সাম্য উধাও।দূর্নীতি, জুলুম অনিয়ম, অবিচার স্বাভাবিক ব্যাপার।
জনগণ এক অমানবিক শোষণের কবলে পতিত। অনিরাপত্তা, খুন, চুরি ছিনতাই ইত্যাদি জীবনের সাধারণ বিষয় হিসাবে দেখা দিয়েছে। মানুষের মধ্যে নেই একতা, হিংসা, বিদ্বেষ বিভেদ মানুষের স্বাভাবিক চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে দেখা দিয়েছে। দেশে উন্নয়নের জোয়ার বয়ে গেছে এমন প্রচারনা শোনা গেলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে তার প্রভাব খুব কমই পরিলক্ষিত হয়। বাস্তবে মানুষের মধ্যে বৈষম্য বেড়েই চলছে। অভাব অনাটন , দুঃখ দুর্দশা নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার।
শোষণ-বঞ্চনার কোনো শেষ নেই। এ প্রেক্ষিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতেই পারে, স্বাধীনতার এত বছর পর স্বাধীনতার স্বপ্ন, প্রত্যাশা ও লক্ষ্যসমূহ কি অপূরনীয় থেকে যাবে? চব্বিশের গণঅভ্যুথানের পর মানুষ (এত ত্যাগ ও জীবনের বিনিময়ে) পরিবর্তনের যে স্বপ্ন দেখেছিল, সে আশাও কি নিরাশা হিসাবে রয়ে যাবে? সে প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।
লেখক: ইসলামিক স্কলার, সাংবাদিক ও চিকিৎসক (খুলনা)।
