বুধবার, ডিসেম্বর ৩

কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতাল এখনও ফ্যাসিস্ট দোসরদের নিয়ন্ত্রণে

|| স্টাফ রিপোর্টার (কুড়িগ্রাম) ||

ফ্যাসিস্টের দোসর দুজন কর্মচারীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, লাগামহীন অনিয়ম-দুর্নীতি, সিন্ডিকেট তৈরির ফলে ২৫০ শয্যা কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে এখন নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবায় পদে পদে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির এখন চরমে।

ভুক্তভোগীদের অভিযাগে জানা গেছে, স্থানীয় আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাতিজা পরিচয় দানকারী হাসপাতালটির প্রধান সহকারী ইউনূস আলী প্রায় ২২ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় নিয়োগ প্রাপ্ত উচ্চমান সহকারী আক্তারুজ্জামান ১২ বছর ধরে একই কর্মস্থলে আছেন। বিগত ফ্যাসিস্ট আমল থেকে এখন পর্যন্ত তাদের দাপটে ডাক্তার নার্সসহ অন্যান্য কর্মচারী তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধাচরণ করলেই পরতে হয় নানা রকম রোষানলে। সেই সাথে হাসপাতালের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও অনিয়ম তাদের জন্য নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে।

কুড়িগ্রাম সদরের ২৫০ শয্যা হাসপাতালটিতে প্রায় নার্সসহ ২০০ জন কর্মচারী রয়েছে। এদের প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন বদলী যোগদান চলমান থাকে। এ ক্ষেত্রে ইউনুছ আলী ও আকতারুজ্জামান সিনিয়র স্টাফ নার্সদের ছাড়পত্র প্রদানে ও যোগদানে প্রকাশ্যে ১০ হাজার টাকা ছাড়া কাজ করেন না। মেডিকেল এ্যাসিস্টেন্ট ইন্টার্নশিপ এর জন্য প্রত্যেকের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা জোরপূর্বক আদায় করে আসছেন। এ ছাড়া ১ শত ৫০ জন সিনিয়র স্টাফ নার্সদের প্রতিমাসে বিল করার নামে ৪ শত টাকা, শ্রান্তি বিনোদনের জন্য প্রতিজনের ৪ হাজার টাকা, সাধারণ ছুটিতে গেলে ২ শত টাকা , মাতৃত্ব ছুটিতে গেলে ৫ হাজার টাকা, হাসপাতাল কেবিনে ভর্তি ও রোগীর রশিদ বাবদ টাকার গড়মিল দেখিয়ে অর্থ আত্মসাৎ এর ঘটনা অহরহ। তাদের কাছে সংরক্ষিত থাকার সুবাদে মেডিকেল সার্টিফিকেটের গোপনীয়তা লঙ্ঘন ও অর্থের বিনিময়ে দীর্ঘদিন আটকে রাখেন। এ ছাড়াও গভীর রাত পর্যন্ত হাসপাতালে অবস্থান করে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকেন। এ ব্যাপারে ইতিপূর্বে তাদের দুজনের বিরুদ্ধে একাধিকবার ভুক্তভোগীরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করেও কাজের কাজতো হয়নি উপরন্তু অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে বিগত সরকারের আমলে ও এখনও ভয় দেখিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে ইউনুস আলী ও আকতারুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের ব্যাপারে কোনো কথা বলতে তারা রাজি হননি।

হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ নুর নেওয়াজ আহম্মেদের সাথে এ ব্যাপারে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমি নতুন এসেছি, বিষয়টি তেমন জানি না। অবগত হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ জানাবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *