শুক্রবার, নভেম্বর ২১

ইবির মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে সাধারণ বিভাগগুলোকে ইসলামিকীকরণ করাই হোক ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর একমাত্র অঙ্গীকার

২২ নভেম্বর (শনিবার) ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রায় অর্ধ শতাব্দীতে এ বিশ্ববিদ্যালয় যে উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তার বাস্তবায়ন কত পারসেন্ট হয়েছে, সে হিসাব কমবেশি সবার কাছেই রয়েছে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল উদ্দেশ্য ছিল কুরানিক নলেজের সাথে সাধারণ শিক্ষার সমন্বয় করা। যাতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের সকল শিক্ষার্থীই দেশের এমন সুযোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবেন, যাঁরা দেশের যে কোন পদে থেকে দেশ জাতির সাথে ইসলামের সেবা করতে পারবেন।

কিন্তু অদ্যাবধি ৩০ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী বেরিয়ে গেছেন এ বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইসলামের নাম নিয়ে। কিন্তু আল কুরআন, দাওয়া, আল হাদিস এবং আরবি এই চারটি বিভাগের শিক্ষার্থী ছাড়া অন্য কেউ ইসলাম সম্পর্কে সামান্যতম ধারণা এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন এমনটি বলা যাবে না।

কারণ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল যে উদ্দেশ্য ছিল, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান অধিকর্তারা কখনোই আন্তরিক ছিলেন না। আবার এ বিষয়ে তাঁদের ধারণাও স্পষ্ট ছিল না, এটাও সত্য কথা।

তারা মনে করতেন এখানে দু’ একটি ইসলামী বিষয় খুললেই এটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে যাবে।

তাই মরহুম প্রফেসর ডঃ আব্দুল হামিদ ১৯৯১ সালে আল-হাদীস বিভাগ খুলেছিলেন।

বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান অধিকর্তা তিনিও তাই করলেন। তিনি ইসলামী বিষয়ে একটি অনুষদ ও চারটি বিভাগ খোলার ঘোষণা দেন। ঘোষণা অনুযায়ী তিনি এগুলোর কার্যক্রমও
অব্যাহত রেখেছেন। এজন্য তাকে আন্তরিক ধন্যবাদ।

শুধু চারটি কেন ৪০টি বিভাগও যদি এ বিশ্ববিদ্যালয়ে খোলা হয়, তবুও এটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় হবে না। কারণ এর মূল উদ্দেশ্য সাধারণ শিক্ষার সাথে ইসলামী শিক্ষার সমন্বয়, সেটা কিন্তু কোন বিভাগের কোন কোর্সের সাথেই হয়নি। এবং এ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কোন বিভাগের সিলেবাস ও কারিকুলাম ঢেলেও সাজানো হয়নি।

এগুলোর সিলেবাস কালিকুলাম দেশের অন্যান্য সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই রয়ে গেছে।

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেমন ইসলামবিহীন উচ্চশিক্ষার ডিগ্রি নিচ্ছেন। তেমনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ বিভাগের শিক্ষার্থীরাও ইসলামবিহীন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট অর্জন করছেন।

আল কুরআন বিভাগসহ কয়েকটি বিভাগের কৃতি ছাত্র এখন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সচিব পদে অধিষ্ঠিত আছেন। এরা দেশের সরকার প্রদত্ত যে কোন বিভাগে পদায়ন করলে তারা সেই পদানুযায়ী তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করছেনও।

কিন্তু তারা কি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল উদ্দেশ্য অনুযায়ী বিশেষ ইসলামিক কোন সুযোগ্য নাগরিক হতে পেরেছেন?

সেটা পারার কথা নয়, কেননা তাদের সিলেবাস সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই ছিল। তারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী হলেও তাদের বিশেষ কোনো ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জিত হয়নি।

তাই অতি দ্রুত সাধারণ সাবজেক্টগুলোকে ইসলামিকীকরণ করে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে বর্তমান অধিকর্তাগণ সচেষ্ট হবেন এটাই দেশজাতির প্রত্যাশা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *