
|| ডা. আনোয়ার সাদাত ||
অর্থনীতিকে আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সংকট, বা অনেকে আবার জনসংখ্যাকে সবচেয়ে বড় সমস্যা বা সংকট হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন। কিন্তু আপনি যদি বাস্তব অবস্থা পর্যালোচনা করেন, তাহলে এটা আপনার নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, আমাদের দেশে দুর্নীতি, বৈষম্য, অর্থপাচারসহ সকল ক্ষেত্রে চরম অনিয়ম অব্যবস্হাপনাই অর্থাৎ নৈতিক অবক্ষয়জনিত কর্মকাণ্ডই অশান্তি ও সংকটের মূল কারণ।
এক্ষেত্রে ব্যক্তি হিসেবে সর্বপ্রথম নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে হবে। এরপর পরিবার ও সমাজকে সঠিক পথে পরিচালনা করার জন্য প্রচেষ্টা চালাতে হবে। কোন ব্যক্তি আদর্শের কথা বলবেন অথচ তার জীবনে ভালো কোন আদর্শ প্রতিফলিত হবে না, তাহলে তার এ কথা সমাজে কোনো প্রভাব ফেলবে না। যে ব্যক্তি নিজের কথায় নিজেই আস্থা রাখে না, তার কথায় মানুষ আকৃষ্ট হতে পারে না। এ ধরনের স্ববিরোধীদেরই কঠোর ভাষায় পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, হে ঈমানদার লোকেরা, তোমরা কেন সেই কথা বল, যা কার্যত নিজেরা করো না। আল্লাহর নিকট এটা খুবই ক্রোধ উদ্রেককারী ব্যাপার যে, তোমরা এমন কথা বলো যা নিজেরা করো না। সূরা সাফ -২,৩
নিজে সংশোধিত হওয়ার পর নিজেকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে হবে এরপর পরিবার-পরিজনকে সঠিক পথে পরিচালনা করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাতে হবে।
একজন মুসলিম হিসেবে সর্ব প্রথম দ্বীনি শিক্ষা অর্থাৎ নৈতিক শিক্ষা ও আদর্শ নিজের মধ্যে ধারণ করতে হবে, সে অনুযায়ী নিজেকে পরিচালিত করতে হবে এবং সাথে সাথে নিজের পরিবার-পরিজনকে সে শিক্ষা ও আদর্শে পরিচালনা করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
আল্লাহ বলেন, হে ঈমানদার লোকেরা নিজেকে ও আপন পরিবারবর্গকে সে আগুন থেকে রক্ষা করো, যার ইন্ধন হবে মানুষও পাথর। -সূরা আত তাহরিম ৬
কোন মুসলমান কেবল একাকী আল্লাহ শাস্তি থেকে বাঁচতে পারবে না, তাকে আপন পরিবার বর্গের দায়ভারও বহন করতে হবে। কারো পরিবার যদি গোমরাহী ও পথভ্রষ্টায় পথে চলে, তাহলে তার দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির উপর বর্তাবে। যে ব্যক্তি আপন পরিবার পরিজনকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে ব্যর্থ, সে সমাজের অন্য লোকদেরকে কিভাবে সঠিক পথে পরিচালিত করবে? কাজেই নিজে সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার সাথে সাথে পরিবার পরিজনকেও দ্বীনি শিক্ষা ও নৈতিকভাবে গড়ে তোলার জন্য সর্বদা তৎপর থাকতে হবে।
লেখক: ইসলামিক স্কলার, সাংবাদিক ও চিকিৎসক (খুলনা)।
