
|| মো: আখতার হোসেন হিরন | সলঙ্গা (সিরাজগঞ্জ) ||
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় অটো-ভ্যান চালক আমিনুল ইসলাম (২০) এর খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। অলিদহ গ্রামের জনসাধারণের আয়োজনে অত্র এলাকাবাসী ও নিহত আমিনুলের স্বজনরা সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকালে অলিদহ বাংলা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে অংশ নিতে নিহত আমিনুলের নিজ গ্রাম অলিদহসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের নারী-পুরুষ ও তাঁর স্বজনরা অংশ গ্রহণ করে।
মিছিলকারীরা স্লোগানে স্লোগানে আমিনুল খুনিদের ফাঁসির দাবি জানায়। মিছিলটি অলিদহ বাজার ঘুরে মাছ বাজারে গিয়ে শেষ হয়। সর্বস্তরের গ্রামবাসীর অংশ গ্রহণে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তারা, অটো-ভ্যানচালক আমিনুল ইসলামের খুনের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার নিশ্চিতের দাবি জানায়।
অসহায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম নিহত আমিনুল ইসলাম জীবিকার তাগিদে অটো-ভ্যান নিয়ে গত ৫ আগস্ট বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। পরে আর বাড়ি ফেরে নাই। এই ঘটনায় আমিনুল ইসলামের মা আমিনা বেগম সলঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। ১৮ অক্টোবর পাশের গ্রাম চকনিহালের একটি ডোবা থেকে মানুষের খন্ড হাড় উদ্ধার করা হয়। পরে আমিনুলের মা প্যান্ট ও জামা দেখে মৃতদেহ সনাক্ত করে। এই ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ৫ নভেম্বর তিনজনকে গ্রেফতার করে সেই সাথে উদ্ধার করে অটো-ভ্যানের যন্ত্রাংশ। পুলিশ জানিয়েছে অটোভ্যানের জন্যই হত্যা করা হয়েছে অটোচালক আমিনুল ইসলামকে বলে আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছে।
নিহত আমিনুল ইসলামের মা জানান, গত রমজান মাসে লিভার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে দুই সন্তান রেখে মারা যায় আমিনুলের বাবা। এরপর সংসারের হাল ধরতে কিশোর আমিনুল অটো-ভ্যান চালানো শুরু করেন। আগস্ট মাসে বাড়ি থেকে অটো নিয়ে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। আমরা সলঙ্গা থানায় জিডি করি। পরে কললিস্ট দেখে সলঙ্গা থানা পুলিশ সাহেব আলী নামে একজনকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। কিন্তু ডিবি পুলিশ ঐ সাহেব আলীকে আটক করেই উদ্ধার করেছে অটো-ভ্যান। আমি আমার ছেলে হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।
আমিনুলের ছোট ভাই জানায়, বড় ভাইয়ের ইনকামে আমাদের সংসার চলত, তাকে হত্যা করে আমাদের মহা বিপদে যারা ফেলেছে তাদের শাস্তি চাই। অটোভ্যান নিয়ে যদি আমার ভাইকে বাঁচিয়ে রাখতো তাহলে আমাদের এই ক্ষতি হতো না। এসময় আমিনুলের মায়ের সন্তান হারানো কান্নায় কেঁদে ফেলেন স্থানীয়রা।
