
|| ডা. আনোয়ার সাদাত ||
সেকুলারিজম নিয়ে বিভিন্ন বিতর্ক রয়েছে। সেকুলারিজমকে ধর্ম নিরপেক্ষ মতবাদ হিসেবে বলা হয়ে থাকে। মুসলিম সমাজেও বিষয়টি নিয়ে অস্পষ্টতা ও বিভিন্ন বিতর্ক রয়েছে।
অভিধানে secularism শব্দের নিম্নরূপ অর্থ এসেছে:
পার্থিববাদী অথবা বস্তুবাদী,
ধর্মভিত্তিক বা আধ্যাত্মিক নয়,
দ্বীনপালনকারী নয়।
একই অভিধানে secularism শব্দের সংজ্ঞায় এসেছে:
“secularism এমন একটি দর্শন, যার বক্তব্য হচ্ছে, চরিত্র-নৈতিকতা ও শিক্ষা ধর্মীয় নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হতে পারবে না”। এ দর্শনের লক্ষ্য দুনিয়াকে দ্বীনের প্রভাবমুক্ত করা। সেকুলারিজম একটি মতবাদ, তার কাজ হচ্ছে পার্থিব জগতের সকল বিষয়কে ধর্মীয় বিধি-নিষেধ থেকে মুক্ত রেখে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, আদর্শিক ও পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে তার নিজের তৈরি বিধান দেওয়া ও সকল স্তরে নেতৃত্ব প্রদান করা। পাশ্চাত্য দেশে এই মতবাদ ব্যাপকভাবে ঠিক তখনই প্রচলিত হয়েছিল, যখন সে দেশের অধিবাসীরা মনে করতে শুরু করেছিল যে ধর্ম নিচ্ছক একটি ব্যক্তিগত ব্যাপার। মানুষের সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবনে এর কোনো প্রয়োজন কিংবা সম্পর্ক নেই ।
সেকুলারিজম হলো একটি বৃহত্তর, ব্যক্তিগত দর্শন, যা মানব জীবনকে ধর্মীয় প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে চায়। অপরদিকে,
ধর্মনিরপেক্ষতা হলো একটি রাষ্ট্রীয় বা রাজনৈতিক নীতি, যা রাষ্ট্রকে ধর্ম থেকে নিরপেক্ষ রাখার উপর জোর দেয়।ধর্মনিরপেক্ষতা বিভিন্ন দেশে ভিন্নভাবে প্রয়োগ করা হয়। যেমন, পশ্চিমা দেশগুলোতে রাষ্ট্র ও ধর্মকে সম্পূর্ণ আলাদা রাখা হয়, অন্যদিকে কোনো কোনো দেশে ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে সকল ধর্মের প্রতি সমান আচরণকে বোঝানো হয়।
সেকুলারিজম ও ধর্মনিরপেক্ষতা বিষয়ে আলেমসমাজের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ট বক্তব্য তুলে ধরে মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত দ্বিধা-দন্দ্ব নিরসন খুবই জরুরী, কেননা এর সাথে রয়েছে ঈমান আক্বীদার প্রশ্ন।
লেখক: ইসলামিক স্কলার, সাংবাদিক ও চিকিৎসক (খুলনা)।
