
|| কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ||
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে কুড়িগ্রাম-৪ (চিলমারী, রৌমারী ও চর রাজিবপুর) আসনে এক ব্যতিক্রমী পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই আসনে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দল—বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী—থেকে আপন দুই ভাই মনোনয়ন পেয়েছেন। তারা হলেন জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক এবং বিএনপির প্রার্থী আজিজুর রহমান। তাদের এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখন সংশ্লিষ্ট আসনের ভোটারদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
জানা যায়, এই দুই ভাইয়ের মধ্যে আজিজুর রহমান বড় এবং মোস্তাফিজুর রহমান ছোট ভাই। তারা রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা। তাদের বাবা মনছুর আহমেদ একসময় মুসলিম লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
সোমবার (৩ নভেম্বর) বিএনপির কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষিত মনোনীত প্রার্থীদের তালিকায় কুড়িগ্রাম-৪ আসনে জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য আজিজুর রহমানকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর কয়েক মাস আগেই জামায়াতে ইসলামী ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমানকে এই আসনের প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করে।
দুই ভাই একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও উভয়েই নিজেদের জয় নিয়ে আশাবাদী। তারা দাবি করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
জামায়াতের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাক আলোকিত দৈনিককে বলেন, “তিনি (আজিজুর রহমান) আমার বড় ভাই, তার প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। তবে রাজনীতির মাঠে তাকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। জামায়াত একটি আদর্শিক দল, এখানে দল যাকে মনোনয়ন দেবে, সবাই তার জন্য কাজ করবে। অন্যদিকে, আমার ভাইয়ের দলে সবাই নেতা হতে চায়, একে অন্যের বিরোধিতা করে আসছে। ভোটাররা সবকিছু জানে এবং বোঝে। জামায়াতের পক্ষে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, ইনশাআল্লাহ জয় আমাদেরই হবে।”
বিএনপির প্রার্থী আজিজুর রহমান বলেন, “আমার ছোট ভাই একসময় আমার কর্মী ছিল। এখন সে জামায়াতের প্রার্থী। আমাদের পারিবারিক সম্পর্কে ফাটল ধরানোর জন্য তারা এমন করেছে, কিন্তু এতে আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না। দল আমাকে প্রার্থী ঘোষণা করায় জামায়াতের পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। ছোট ভাইয়ের প্রতি পরিবার ও গ্রামবাসীর সমর্থন নেই। ভোটাররা আমার প্রতি আস্থাশীল, তারা বিএনপিকে জয়ী করবে।”
দুই দলের এই প্রভাবশালী দুই পরিবারের দুই ভাইয়ের লড়াই এখন কুড়িগ্রাম-৪ আসনে নির্বাচনী উত্তাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এই ব্যতিক্রমী প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ভোটারদের মধ্যে যেমন কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে, তেমনি শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে এর প্রভাব কী দাঁড়ায়, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে রাজনৈতিক মহল।
