
|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||
খুলনার দৌলতপুরের পাবলার পারভেজ হাওলাদার ও সুপর্না সাহা হত্যা মামলার রায়ে সাতজনের মৃত্যুদণ্ড ও দুই জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকেলে খুলনার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক সুমি আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে দণ্ডপ্রাপ্ত সাতজনের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— ইমামুল কবীর জীবন (পলাতক), রাজ, শহীদ শাহারিয়ার মিথুন, তুষার গাজী, সোয়েব সুমন (পলাতক), শাকিল (পলাতক) এবং তুহিন। এছাড়া কুটি ও শামীম নামের দুই আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফারহানা হক বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছর পর আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করল। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট। বিচারপ্রক্রিয়া দীর্ঘ হলেও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী শুভেন্দু রায় চৌধুরী।
ঘটনার পটভূমি
২০০৯ সালের ৩ জানুয়ারি রাতে দৌলতপুরের দেয়ানা সবুজ সংঘ মাঠের কাছে সাহাপাড়ায় সন্ত্রাসীরা গুলি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পারভেজ হাওলাদারকে।
তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা সুপর্না সাহা, তার বাবা দিলিপ সাহা ও মা রেখা সাহা। এ সময় সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক সুপর্না সাহাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পরদিন, ২০০৯ সালের ৪ জানুয়ারি, পারভেজের বাবা নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রথমে সাতজনকে আসামি করা হলেও পরবর্তীতে তদন্ত শেষে নয়জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেওয়া হয়।
বিলম্বের কারণ ও প্রতিক্রিয়া
মামলার তদন্ত ও সাক্ষ্যগ্রহণে দীর্ঘসূত্রতা, আসামিদের পলাতক থাকা এবং সাক্ষীদের বারবার অনুপস্থিতি—এ তিন কারণে মামলাটি ঝুলে ছিল প্রায় দেড় যুগ। অবশেষে বিচার সম্পন্ন হওয়ায় নিহতদের স্বজনদের মুখে স্বস্তির হাসি ফোটে।
রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত পারভেজের স্বজনরা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “১৬ বছর ধরে এই রায়ের জন্য অপেক্ষা করেছি। আজ মনে হচ্ছে, ওরা ন্যায়বিচার পেল।”
