
|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||
খুলনা মহানগরীর লবণচরা থানার সবুজপল্লী এলাকায় স্ত্রীকে ঘুমন্ত অবস্থায় জবাই করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম ডলি বেগম (৪৫) এবং ঘাতক স্বামী মো. নাজমুল হাসান মোল্লা (৫০), যিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি।
লবণচরা থানা পুলিশ জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে ভোররাতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ডলি বেগমের গলায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফলকাটা ছুরি দিয়ে আঘাত করেন নাজমুল হাসান। এতে তিনি গুরুতর জখম হন। পরে ভাড়াটিয়া ও প্রতিবেশীরা রক্তাক্ত অবস্থায় ডলি বেগমকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী জানায়, ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে পাশের ঘর থেকে চিৎকার শুনে তারা এগিয়ে গেলে রক্তাক্ত অবস্থায় ডলি বেগমকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। এসময় নাজমুল হাসান পিছনের বেড়া দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তবে প্রতিবেশী রিকশাচালক আরিফ তাকে নগরীর লায়ন্স স্কুলের সামনে থেকে ধরে এনে স্থানীয়রা বেঁধে রাখেন।
পরে খবর পেয়ে লবণচরা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘাতক নাজমুল হাসানকে আটক করে এবং হত্যায় ব্যবহৃত ফলকাটা ছুরিটি উদ্ধার করে।
নিহত ডলি বেগম খুলনার পাইকগাছা উপজেলার শান্তা গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের কন্যা।
ঘাতক নাজমুল হাসান মহানগরীর লবণচরা থানার দরগাপাড়া এলাকার আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার ছেলে। তাদের এক পুত্র ফাহিম (২৫) এবং এক কন্যা সাদিয়া (২২) রয়েছে।
নিহতের কন্যা সাদিয়া জানান, “বাবা-মায়ের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হতো। ছোটখাটো বিষয় নিয়েও বাবার রাগ বেড়ে যেত। আজ ভোরে সেই ঝগড়ার জেরেই বাবা মাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে।”
লবণচরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানওয়ার হোসাইন মাসুম বলেন, “সকালে এলাকাবাসীর ফোন পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে যাই। ঘাতক স্বামী নাজমুল হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটিও উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।”
এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, নাজমুল ও ডলি দীর্ঘদিন ধরে সবুজপল্লীর ৪ নম্বর কাশেম সড়কের মাথায় খালেকের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। তাদের পারিবারিক কলহ প্রায়ই শোনা যেত। বৃহস্পতিবারের এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডে স্থানীয়রা হতবাক ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।