বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৯

কুড়িগ্রামে চার পা বিশিষ্ট বিরল বক দেখতে মানুষের ঢল

|| জাকারিয়া শেখ | ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি ||

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বালাটারী গ্রামে পাওয়া গেছে এক আজব বকপাখি (Egret) যার রয়েছে চারটি পা। প্রকৃতিতে এমন দৃশ্য অত্যন্ত বিরল।খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ ছুটে আসছেন শুধুমাত্র এক নজর দেখার জন্য।

স্থানীয় হাঁড়ি-পাতিল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদই প্রথম বকটিকে দেখতে পান। তিনি জানান, কয়েকদিন আগে পুকুরপাড়ে অসুস্থ অবস্থায় পাখিটি পড়ে থাকতে দেখে তিনি বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর চিকিৎসা ও নিয়মিত যত্নের মাধ্যমে পাখিটিকে সুস্থ করে তোলেন। আব্দুর রশিদের ভাষ্য, “পাখিটির জন্য প্রতিদিন মাছ সংগ্রহ করে খাওয়াচ্ছি। সেবা-যত্ন করায় এখন বেশ সুস্থ আছে। পাখির প্রতি আমার ভালোবাসাই আমাকে এভাবে যত্ন নিতে অনুপ্রাণিত করছে।”

এদিকে চার পা বিশিষ্ট বক দেখার খবরে এলাকায় ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ আব্দুর রশিদের বাড়িতে ভিড় করছেন পাখিটিকে এক নজর দেখার জন্য। অনেকেই ছবি তুলছেন, আবার কেউ কেউ ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ফলে স্থানীয় পর্যায়ে বিষয়টি এখন ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

শিশু-কিশোরদের মাঝেও এ নিয়ে উৎসাহ দেখা গেছে। স্থানীয় শিশু জিহাদ বলেন, “আমরা গ্রামে অনেক বক পাখি দেখেছি। সবারই দুইটি পা থাকে। কিন্তু এই বকটির চারটি পা দেখে আমরা সবাই অবাক হয়েছি।”

একই গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “এমন দৃশ্য আমি জীবনে প্রথম দেখলাম। চার পা বিশিষ্ট বক সত্যিই বিরল ঘটনা। প্রতিদিন শত শত মানুষ ভিড় করছে শুধু এক নজর দেখার জন্য। বিষয়টি এখন শুধু স্থানীয় নয়, জাতীয়ভাবেও আলোচনার দাবি রাখে। আমি মনে করি, এ ধরনের বিরল প্রাণীকে সুরক্ষায় রাখতে কর্তৃপক্ষের এগিয়ে আসা জরুরি।”

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জেনেটিক বৈচিত্র্যের কারণে এ ধরনের প্রাণীর জন্ম হলেও তা টিকে থাকা খুবই কঠিন। তবে যত্নের কারণে পাখিটি এখনো সুস্থ রয়েছে। এ ঘটনাকে ঘিরে কৌতূহলী জনতার ভিড় স্থানীয় এলাকায় এক ধরনের মেলায় পরিণত হয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরিফুর রহমান কনক জানান, “এটি জন্মগত ত্রুটি। জেনেটিক্সজনিত কারণে পাখিটির শরীরে অতিরিক্ত অঙ্গ তৈরি হয়েছে। প্রকৃতিতে এ ধরনের ঘটনা খুবই বিরল হলেও অস্বাভাবিক নয়। তবে চার পা বিশিষ্ট বক মানুষের কাছে নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর একটি দৃশ্য।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *