
|| শেখ শাহরিয়ার | জেলা প্রতিনিধি (খুলনা) ||
খুলনার সিনিয়র সাংবাদিক ওয়াহিদ উজ জামান বুলুর মৃত্যুর কারণ এখনো পরিষ্কার নয়। পুলিশ বলছে, তিনি রূপসা সেতু থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তবে পরিবারের দাবি, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
গত সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে বুলুর মরদেহ খুলনা প্রেসক্লাবে আনা হয়। পরে বিভিন্ন সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে গোয়ালখালী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
পরিবার, পুলিশ ও বিভিন্ন সূত্র জানায়, শনিবার রাতে ঢাকায় থাকা ছোট ভাই আনিসুজ্জামান দুলুর সঙ্গে শেষবার কথা হয় বুলুর। তিনি তখন বলেন, ভালো আছেন। রবিবার সকালে বাগমারা আদর্শপল্লিতে শ্যালকের বাড়িতে নাস্তা করে বের হওয়ার পর থেকে আর তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক অশান্তিতে ছিলেন সাংবাদিক বুলু। প্রথম স্ত্রী ১১ মে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তার আর কোনো খোঁজ মেলেনি। এরপর বুলু ডুমুরিয়ার তানিয়া সুলতানা নামে এক নারীকে সন্তানসহ বিয়ে করেন। টাকা-পয়সা ও পারিবারিক বিরোধ নিয়ে সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়তে থাকে। শেষ পর্যন্ত তালাক হয় এবং আর্থিক লেনদেন নিয়ে বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
বুলুর ভাই দুলু বলেন, “তানিয়া নামে এক নারী বুলুকে স্ত্রী দাবি করে তার উপর মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছিল। তবে আত্মহত্যার কথা আমরা বিশ্বাস করি না। তাকে হয়তো সেতু থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে।”
পিবিআই খুলনার পরিদর্শক কাজি মোস্তাক আহমেদ জানান, ৩০ জুলাই নারী নির্যাতন মামলায় তানিয়া সুলতানা বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। ২৬ আগস্ট মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান তিনি। ওইদিনই তানিয়া আপোষনামা জমা দেন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে জানান মোস্তাক।
খুলনা নৌপুলিশের সুপার ডা. মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, “বুলুর মৃত্যুর ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। আপাতত আমরা ঘটনাটিকে রহস্যজনক হিসেবে দেখছি। সিসি টিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও মোবাইল ফোন পরীক্ষা চলছে। তদন্তের পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে সাংবাদিক বুলুর মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় খুলনা প্রেসক্লাব, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেসক্লাব মাল্টিপারপাস কোঅপারেটিভ সোসাইটি, টিভি রিপোর্টার্স ইউনিটি, বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন সংগঠন।
সাংবাদিকতার শুরু দৈনিক বঙ্গবাণী পত্রিকায়। পরে আজকের কাগজ, চ্যানেল ওয়ান, ইউএনবি, দৈনিক প্রবাহ ও সর্বশেষ দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদ-এ কাজ করেন। তিনি খুলনা প্রেসক্লাব ও খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য ছিলেন।