রবিবার, জুলাই ১৩

দিনদুপুরে স্কুলছাত্রী অপহরণে ছাত্রদল নেতার সম্পৃক্ততা, বানারীপাড়ায় চাঞ্চল্য

|| মো. আছিবুল ইসলাম | বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি ||

বরিশালের বানারীপাড়ায় প্রকাশ্য দিবালোকে এক স্কুলছাত্রী অপহরণের ঘটনায় ছাত্রদল নেতাসহ একদল যুবকের নাম উঠে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার সলিয়াবাকপুর এলাকায় শাখারিয়া গ্রামের একটি সড়কে এই ঘটনা ঘটে। সিএনজি ও অটোরিকশা ব্যবহার করে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ কার্যক্রম চালানো হয়।

ভুক্তভোগী কিশোরী (১৪) চাখার ওয়াজেদ মেমোরিয়াল বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পরীক্ষা শেষে ভাগ্নে কাওসারের মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার পথে ওৎ পেতে থাকা অপহরণকারীরা তার পথরোধ করে। তারা কাওসারকে বেধড়ক মারধর করে ও মেয়েটিকে জোরপূর্বক সিএনজিতে তোলে নিয়ে যায়। এছাড়া মোটরসাইকেলের চাবি ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

অপহরণের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে স্থানীয় মাদারকাঠী গ্রামের সালমান খান হৃদয়ের নাম উঠে এসেছে, যিনি দীর্ঘদিন ধরে ওই ছাত্রীর প্রতি প্রেমের প্রস্তাব ও অশালীন আচরণ করে আসছিলেন বলে অভিযোগ। তার সঙ্গে ছিলেন চাখার সরকারি ফজলুল হক কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক তামজিদ নুসায়ের মিরন সরদার এবং আরও কয়েকজন—শাওন, ফাহিম সিকদার, ইমন সিকদারসহ ৫-৭ জন যুবক। ঘটনাস্থলে থাকা স্বজনেরা বাধা দিতে গেলে তাদের ওপরেও হামলা চালানো হয়।

অপহৃত ছাত্রীর মা সাথী আক্তার বলেন, আগেও হৃদয়ের বিরুদ্ধে বরিশাল আদালতে মামলা করেছিলেন (মামলা নং-১০৩৮)। সে সময় হৃদয় মুচলেকা দিয়ে ছাড় পেলেও পুনরায় মেয়েকে অনুসরণ ও হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। নিরাপত্তার জন্য প্রতিদিন নিজেই স্কুলে আনানেওয়ার ব্যবস্থা করতে বাধ্য হন তিনি। ঘটনার পরপরই বানারীপাড়া থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় হৃদয় ও মিরন সরদারসহ পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আরও ২-৩ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।

এ বিষয়ে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোস্তফা জানান, “মামলা গ্রহণের পর থেকেই অভিযান চলছে। আমরা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।”

অপহরণের ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অভিভাবকদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা কাজ করছে। অনেকেই দাবি তুলেছেন, জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *