শনিবার, জুলাই ২৬

সাতকানিয়ায় চেয়ারম্যানের আত্নীয় হওয়ায় একাই পেলেন অর্ধকোটি টাকার সেতু

|| লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি ||

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার সোনাকানিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড ও লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী স্হানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অর্থায়নে শুধুমাত্র একটি পরিবারের ৩-৪টি ঘরের জন্য প্রায় ৩৩লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মান করা হচ্ছে। এ ঘটনায় স্থানীয় এলাকাবাসী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ২০২৪-২৫অর্থবছরে পাকা সেতু-কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সড়কের সোনাকানিয়া ইউনিয়নের নানিয়ারছড়া খালের ওপর সেতু নির্মাণের বরাদ্দ হয়। ৩৩ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪ ফুট প্রস্থের সেতুটির নির্মাণব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৩লাখ টাকা। মেসার্স এম এম এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেতুটির কাজটি করছে।

স্হানীয়দের অভিযোগ বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা জসিম উদ্দীন তার এক আত্মীয়ের বাড়ির উঠানে সেতুটি স্হাপনের জন্য অনুমোদন নেন। সেতুটি নির্মান হলে একটি পরিবার ছাড়া অন্য পরিবারগুলো উপকৃত হবে না তাই সেতুটি অনুমোদিত স্হান হতে সামান্য দক্ষিণে সকলের উপকারে আসে এমন স্হানে নির্মান করার জন্য গত ১৬ ফেব্রুয়ারি অর্ধ শতাধিক গ্রামবাসি সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,যে স্হানে সেতুটি হচ্ছে সেখানে শুধু চেয়ারম্যানের আত্মীয়ের পরিবারের কয়েকটি বাড়ি উপকৃত হবেন, অন্য পাড়ার লোকজন নয়। অথচ অন্য যে স্হানটিতে সেতুতি নির্মানের জন্য এলাকাবাসি আবেদন করেছিল সেখানে ৫টি পাড়ার অন্তত অর্ধ শতাধিক পরিবারের বসসবাস। তাই এত বড় বাজেটের সেতুটি কেন স্হানীয় অন্য পরিবারগুলোর বাদ দিয়ে একক পরিবারের জন্য নির্মান করা হচ্ছে সেটা নিয়ে স্হানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছ।

মানববন্ধন করা স্থানীয় এক ব্যাক্তি ইউসুফ প্রকাশ ভেট্টা বলেন, আসলেই এই ব্রিজটি হলে দুটি পরিবার ছাড়া কারও উপকারে আসবে না, যে কারও সামনে আমি বলতে পারব, তবে ৪০-৫০ পরিবারের জন্য ব্রিজটি ব্যবহারে একটি রাস্তা সৃষ্টি করা হলে সবার উপকার হত।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাতকানিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন,সেতুট সেখানে কেন নির্মান করা হচ্ছে সে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার জানেন।এ ব্যাপারে আমার কোন বক্তব্য নেই।

সাতকানিয়ার প্রকল্প লোহাগাড়ায় বাস্তবায়নের বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, এক উপজেলার প্রকল্প অন্য উপজেলায় করার সুযোগ নেই।

জানতে চাইলে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিল্টন বিশ্বাস বলেন, আবেদনের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে পরিদর্শন করে এলাকাবাসির সাথে কথা বলেছি। অনুমোদিত স্হানের পরিবর্তে দাবিকৃত স্হানে সেতুটি নির্মান করা হলে সেখানে ছোট দুটি কালভার্ট করতে হবে তাই সেতুটি অনুমোদিত স্হানেই নির্মান করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *