
|| জাহিদ খান | জেলা প্রতিনিধি (কুড়িগ্রাম) ||
কুড়িগ্রাম জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল রাজীবের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বন্যা পরবর্তী সংস্কার কাজে নিয়মবহির্ভূতভাবে টেন্ডার ছাড়াই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় দেখানো হয়েছে।
জানা গেছে, বন্যা পরবর্তী সংস্কারের নামে বেরুবাড়ি হাটের অভ্যন্তরীণ রাস্তা সংস্কার, মাটি কাটা, নামফলক স্থাপন এবং হাট শেড নির্মাণ বাবদ প্রায় ২৫ লাখ টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। একইভাবে মাছ বাজার হাট শেড নির্মাণে ২৭ লাখ টাকা এবং খোলা বাজার সংস্কার, দুটি শৌচাগার ও ড্রেন নির্মাণে ২৬ লাখ টাকার ব্যয় দেখানো হয়।
নাগেশ্বরী উপজেলার অন্যান্য হাটবাজার, যেমন স্কুলের হাট, ছিলাখানা বাজার, কালিগঞ্জ বাজার সংস্কার বাবদ মোট ৩ কোটি টাকা বরাদ্দের কাজও একই কায়দায় টেন্ডার ছাড়াই বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কাজের ধরণ ও বাজেট সম্পর্কে জানতে স্থানীয়রা বারবার প্রকৌশল অফিসে গেলেও কোনো তথ্য পাননি। এমনকি তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করার পরও দিনের পর দিন ঘুরতে হয়েছে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে তথ্য হাতে পান ভুক্তভোগীরা।
তথ্য পাওয়ার পর স্থানীয়রা সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, কাজের মান অত্যন্ত নিম্নমানের এবং বাস্তবায়িত কাজের পরিমাণ বরাদ্দের অর্ধেক টাকাও ছুঁতে পারেনি।
স্থানীয়দের অভিযোগ, এই প্রকল্পগুলোতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে টেন্ডার ছাড়া কাজ করিয়ে অনিয়ম করা হয়েছে।
অদ্য ২৬ মার্চ, এই অনিয়মের বিষয়ে জানতে গেলে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল রাজীব। “ওই কাজ শেষ, এটা নিয়ে কিছু বলার নেই” — এমন বক্তব্য দিয়ে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং সাংবাদিকদের হুমকি দিয়ে বলেন, “আপনারা যা পারেন লিখেন, আমিও লিখবো, মামলা করবো।”
স্থানীয়রা এই অনিয়ম ও দুর্নীতির সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি প্রশাসনের নজরে আনার জন্য জোরালোভাবে আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক সমাজ।
এই দুর্নীতির ঘটনা এখন পুরো এলাকায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে। এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।