
|| আছিবুল ইসলাম | বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি ||
বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন বানারীপাড়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ (১৭ রমজান) বাইতুন নাজাত কমপ্লেক্সে এক সফল এবং আকর্ষণীয় আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমাজের মধ্যে একতা, ঐক্য এবং প্রজ্ঞা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিক্ষামূলক আলোচনা ও সুস্থ সামাজিক সম্পর্ক স্থাপনের দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বরিশাল জেলা নায়েবে আমির এবং বরিশাল-০২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব মাস্টার আব্দুল মান্নান। তার বক্তব্যে তিনি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় তুলে ধরে বলেন, “শিক্ষকদের পেশাগত দায়িত্ব কেবল শিক্ষাদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না, বরং একজন আদর্শ শিক্ষককে তার শিক্ষার্থীদের প্রতি স্নেহশীল ও নিবেদিত হতে হবে। শিক্ষকের মনোভাব, আদর্শ ও কর্মীশক্তি ছাত্রদের জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। একজন শিক্ষক যদি বাবার মতো সন্তানকে স্নেহ করতে পারেন, তবে তা ছাত্রদের জীবনের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান হতে পারে।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আদর্শ শিক্ষক ফেডারেশন বরিশাল জেলা সভাপতি অধ্যাপক সৈয়দ আহমদ খান, বানারীপাড়া উপজেলা জামায়াত আমির অধ্যাপক খলিলুর রহমান শাহাদাত, বাংলাদেশ মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক পরিষদ বরিশাল জেলা সভাপতি মাওলানা সাইদুর রহমান সেলিম এবং স্থানীয় শিক্ষক সমাজের আরও অনেকে। বক্তারা সভায় অংশগ্রহণ করে শিক্ষকদের নৈতিক দায়িত্ব, শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং শিক্ষার্থীদের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন।
শিক্ষকদের পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি তাদের সামাজিক দায়িত্ব এবং রমজান মাসের পুণ্যময়তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। বক্তারা উল্লেখ করেন যে, শিক্ষকের দায়িত্ব শুধুমাত্র পাঠদান নয়, বরং শিক্ষার্থীদের চরিত্র গঠন এবং তাদের ভবিষ্যত উন্নয়নও শিক্ষকদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এতে সমাজে শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি শিক্ষার মানোন্নয়নের পথও প্রশস্ত হবে।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে যে অংশটি বিশেষ আকর্ষণীয় ছিল তা হলো ইফতার মাহফিল। ধর্মীয় অনুভূতি ও সামাজিক একতার দৃঢ় বন্ধনে সবাই একত্রে ইফতার গ্রহণ করেন। এই ধরনের অনুষ্ঠান শিক্ষকদের মধ্যে একে অপরকে আরো ভালোভাবে জানার সুযোগ তৈরি করে, যার ফলে শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি ঘটবে এবং একে অপরের কাছ থেকে নতুন ধারণা ও দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষকরা নিজেদের পেশাগত জীবনকে আরও উন্নত করতে সক্ষম হবেন বলে মনে করেন ভদ্রমহল।
এছাড়াও, এ ধরনের আয়োজন স্থানীয় শিক্ষকদের মধ্যে পারস্পরিক সহমর্মিতা ও বন্ধন স্থাপন করে, যা সমাজে শিক্ষার পরিবেশ আরও শক্তিশালী করে তোলে। ভবিষ্যতে, এই ধরনের ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা সমাজে শিক্ষকদের ভূমিকা এবং শিক্ষার গুণগত মান বাড়ানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। প্রধান অতিথির বক্তব্য, বিশেষ অতিথিদের মূল্যবান উপদেশ, এবং সম্মিলিত ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে সামাজিক ঐক্য ও সহযোগিতার চিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে। তাই এ ধরনের আয়োজন ভবিষ্যতে শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়ন, সমাজের উন্নয়ন এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রচারে বড় ভূমিকা পালন করবে।