|| আব্দুল হামিদ সরকার ||
হে জীবন কি তুমি পেলে?
তুমিতো যাচ্ছো ক্ষয়ে প্রতি পলে পলে।
স্বপ্নগুলো আজ বার্ধক্যের ভাড়ে নুয়ে পড়া,
লবণাক্ততায় ধস নেমেছে স্মৃতির অট্টালিকা ছিন্নহারা।
হে জীবন কি তুমি পেলে?
চাওয়া পাওয়ার হিসেব গড়মিলে
আসমান ছুঁয়ে যাওয়ার স্পৃহার ছিলো না যে শেষ
সময়ের স্রোতে মাথায় পাকধরা মুঠো কেশ।
হে জীবন কি তুমি পেলে?
ছবির নেগেটিভগুলো ভীষণ এলোমেলে
লালচে পড়া দন্তের হাসি বিশ্রী বেহালে
প্রণয়ের স্বপ্ন ঠোঁটে বালিহাঁস কেবলই খেলে।
হে জীবন কি তুমি পেলে?
নিঃশ্বাসটুকু মৃদুমন্দ এখনো চলে
স্রষ্টার কৃপায় আজো আছি বেঁচে
বিবিধ সমস্যার মহাসমুদ্র সেঁচে।
হে জীবন কি তুমি পেলে?
সোনা ঝরা রৌদ্র হাসি খেলে
জীবনের উপসংহার সন্নিকটে
শরীরের পেশীগুলো ভীষণ মটমটে।
হে জীবন কি তুমি পেলে?
চশমার কোণে ঝাপসা চোখের কোলে
স্মৃতির বাসরে বেজে উঠা কতো কথা
কেবলই হাসি কান্না আর পাহাড়সম ব্যথা।
হে জীবন কি তুমি পেলে?
জীবন ধারাপাতের হিসেব নাহি মেলে
রঙিন পৃথিবীটা আজ ধূসর বর্ণে আঁকা
মনের স্টেশনে আজ নাহি গাড়ি, কর্মবিরতি আর ফাঁকা।
হে জীবন কি তুমি পেলে?
নদীর স্রোতের মতোই বয়ে গেলে
কাগজের নৌকার মতোই ভিজে একাকার
ত্রিভূবন ছেড়ে যাবো চলে, প্রিয়জনেরা হবে নির্বিকার।
জীবনের কন্ঠে এলো এবার প্রত্যুত্তর
এরই নামই তো জীবন চত্বর
জীবন ঠিক প্রকৃতির আকাশের মতো
কখনো মেঘ,কখনো রৌদ্র, সুখ আর দুঃখ যতো।
লেখক: বিশিষ্ট কবি ও ঔপন্যাসিক এবং সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, বেলকুচি বহুমুখী মহিলা ডিগ্রি কলেজ, বেলকুচি, সিরাজগঞ্জ। রচনাকাল: ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫।