শুক্রবার, ডিসেম্বর ২৭

হামাসের তুফান আল-আকসা এবং বিশ্ব বিবেক

হামাস (হারকাতুল মুকাওয়ামাতিল ইসলামিয়্যাহ) ইসলামী প্রতিরোধ আন্দোলন বৈশ্বিক দৃষ্টিভংগীর ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। যারা একদিন ইট পাথর দিয়ে দখলদার ইহুদী সেনাবাহিনীর মুকাবিলা করতো আজ তারা পরিবর্তিত রূপে নিজ ভূ-খন্ডে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরী রাইফেল/স্নাইপার দিয়ে নাস্তানাবুদ করে দিচ্ছে বিশ্বের শক্তিশালী সেনাবাহিনীকে, ইয়াসিন ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে উড়িয়ে দিচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী ইসরাঈলী ট্যাংক মীরকাফকে। আকাশ পথে বৃষ্টির মত বোমা বর্ষণ করে যায়নবাদী ইসরাঈলী সরকারের সেনাবাহিনী কেবল নিরীহ ফিলিস্তিনি নারী, শিশু, বৃদ্ধ সাধারণ জনগণের জীবন কেড়ে নিচ্ছে, স্কুল হাসপাতাল, মাসজিদসহ সাধারণ মানুষের বসতভিটা মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু হামাসের হাতে বন্দীদের না উদ্ধার করতে পারছে, না হামাসের প্রতিরোধ জিহাদ থামাতে পারছে।

ইতোমধ্যেই যুদ্ধের দিনক্ষণ তৃতীয় মাসও শেষের পথে। কূটনৈতিকভাবে কোনঠাসা হয়ে পড়া ইসরাঈলকে বাঁচানোর মিশন নিয়ে বিশ্বমোড়ল আমেরিকা নির্লজ্জভাবে ভেটো পাওয়ারের যথেচ্ছ ব্যবহার করে চলেছে। তারপরও বিশ্বের অনেক নন মুসলিম দেশ থেকে ইসরাঈলী রাষ্ট্রদূতকে বিতাড়িত করা হয়েছে এবং বিশ্বের ১৪৩টি দেশ স্বাধীন ফিলিস্তিনের পক্ষে দাড়িয়েছে। ইউরোপের যে সব দেশ সরকারীভাবে ইসরাঈলের পক্ষে, সে সব দেশেও জনমত ফিলিস্তিনের পক্ষে বড় বড় শোডাইনের মাধ্যমে জানান দিচ্ছে।

মানবাধিকারের ধ্বজাধারীরা গোয়বেলসের নীতি অনুসরণ করে যুদ্ধ পরিস্থিতির আসল চিত্র লুকিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে মিথ্যা কল্পকাহিনী প্রচার করে যাচ্ছে। আল জাযিরাহর সাংবাদিক বন্ধুরা জীবন-মরণ সন্ধিক্ষণে দাড়িয়ে তুলে আনছে বাস্তব চিত্র। যায়নবাদী মিডিয়া এবং তাদের দোসর সিএনএনসহ অন্যান্য পাশ্চাত্য মিডিয়া যুদ্ধের প্রথম থেকেই হামাসের হাতে বন্দী ইসরাঈলী নারী শিশুদের উপর পাশবিক নির্যাতনের কল্পকাহিনী প্রচার করে এবং খোদ ইসরাঈলী প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়হু এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মুখেও তা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু বিধিবাম, বন্দী বিনিময়ের পর বিশ্ব জানতে পারলো ইসরাঈলী নারী-শিশুরা হামাসের মেহমান হিসেবে রাজ রাণীর মতোই জীবন কাটিয়ে এসেছে এবং শিশুদের প্রতি হামাসের আচরণ ছিল বন্ধুসুলভ-খাবারের আবদার মেটানো, এমন কি বিনোদন দেয়ার জন্য তাদের সাথে খেলাধূলাও করেছে ।

ইসরাঈলী এক নারী তার ও তার কন্যার সাথে হামাসের আচরণ ভুলতে না পেরে কৃতজ্ঞতা স্মারক খোলা চিঠি লিখেন হামাসের কাছে, যা বিশ্ব মিডিয়ায় হৈচৈ ফেলে দেয়। দ্বিতীয় দফায় মুক্তি পাওয়া এক শিশু বাসায় খেতে অস্বীকৃতি জানায় এবং হামাস যেভাবে তাদের আপ্যায়ণ করতো, সে ধরনের আয়োজন করার জন্য তার বাড়ীর আশপাশের শিশুদের ডেকে এনে সে নিজ হাতে খাবার পরিবেশন করে এবং এদের মধ্যে যে খুব ক্ষুধার্ত তাকে সে আগে খাবার দেয় এবং বেশী খাবার দেয়। তাকে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় টানেলের মধ্যে যেখানে তাদেরকে রাখা হয়েছিল সেখানে সবাই এক সাথে বসে একই খাবার খেতো এবং তাদেরকেও একই খাবার খেতে দিতো এবং একে অপরকে খাবারে প্রধান্য দিতো। কথাগুলো যখন লিখছি, তখন চোখ ছল ছল, সাড়ে চৌদ্দশত বছর আগের সাহাবাদের চরিত্র ফুটে উঠেছে হামাস যোদ্ধাদের আচরণে। বিশ্ববাসীর কাছে যাদেরকে কাফির ও তাদের দোসর মুনাফিক মুসলিমরা সন্ত্রাসী তকমা দিয়ে সুখ নিদ্রা অনুভব করতো ইসরাঈলী বন্দীদের জবানবন্দী অন্ধ বিশ্ববিবেককে যেনো আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ইসলামের সৌন্দর্য কী ও কত প্রকার। হাজারো অত্যাচারিত নির্যাতিত ফিলিস্তিনের মুসলিম প্রতিরোধ যোদ্ধারা প্রতিশোধ না নিয়ে কী আচার-ব্যবহারটাই না উপহার দিল।

হামাসের মুখপাত্র আবূ উবাইদাহ সারা দুনয়িার মাযলুমের কণ্ঠস্বর, কী তার কথার মাধুর্যতা, ভাষার পোক্ত গাথুনি, সাবলিল উপস্থাপনা, জিহাদের ময়দানের এক বীর সেনানী, চোখেমুখে ঠিকরে বের হচ্ছে যেনো বারুদের মশাল, মনে হয় এখনি ছিলে খুবলে খেয়ে ফেলবে দখলদার হায়েনাদের কলিজা। কিন্তু হামাসের বাইরে দুনিয়ার কেউ কী তার আসল নাম জানে? কী তার আসল পরিচয়? নিক নেইম আবূ উবাইদাহ ধারণের পেছনের ইতিহাসই বা কী?এসব প্রশ্নের কিঞ্চিত জবাব দেবার আগে আরবের শায়খ বলে পরিচিত কতিপয় আবিদুল ইবাদ (দাসানুদাস) এর মুখ নি:সৃত অমীয় বাণী শুনে আগে ধন্য হই: “যেহেতু আবূ উবাইদাহর কণ্ঠস্বর সুমিষ্ঠ অম্লমধুর, কোমল হৃদয়ে ঝংকার তোলার মত তাই এটি পর্দার বরখেলাপ- তার কণ্ঠস্বর শোনা আরব্যরমনীদের জন্য হারাম।’’

ভাগ্যিস আবূ উবাইদাহ নামধারী ফিলিস্তীনের রুমালে ঢাকা মুজাহিদের চেহারা মোবারক দেখার কোন সুযোগ আরব নারীরাতো দূরে থাক বিশ্বের অন্যসব সাধারণ নারীদেরও নেই। তার অবয়বটা যদি টিভি স্ক্রীণে দেখার সুযোগ ঘটতো তাহলে বাটপার ফাসেক ফাজেরদের ফতওয়া কত প্রকার ও কী কী তা জানার সুযোগ আরবের নারীরাতো বটেই সমগ্র দুনিয়ার মানুষের জ্ঞান কিঞ্চিত হলেও বৃদ্ধি পেতো। আরব নারীরা অবশ্য ফতওয়া শুনে যে মন্তব্যটি করেছে, সেটিও এখানে প্রণিধানযোগ্য: আরব বিশ্বে পুরুষ বলতে আমরা একজনকেই চিনি, তিনি আবূ উবাইদাহ (হা.)।

সেদিন জর্ডানের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ডামি আবূ উবাইদাহকে হাজির করে তার জ্বালাময়ী ভাষণ প্রচার করা হলো। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ডামি আবূ উবাইদাহ উপস্থাপনের মাধ্যমে রিয়েল হিরোর প্রদর্শনী করা হচ্ছে, তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে মাযলুমের কণ্ঠস্বর।
হামাসের আল কাসসাম ব্রিগেডে আবূ উবাইদাহ নামে হয়তো কেউই নেই, কিন্তু তিনি যুদ্ধের ময়দান দাপিয়ে বেড়ানো লড়াকু মুজাহেদীন এর মুখপাত্র। যতদূর জানা যায়, তিনি গাযযাহ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি. হোল্ডার। তার আসল নাম জানা নেই কারো। তবে নিক নেইম আবূ উবাইদাহ ধারণের পেছনে অবশ্যই ঐতিহাসিক কারণ রয়েছে। আল্লাহর রাসূল সা. বলেছিলেন: আমার উম্মত শাম তথা মাসজিদুল-আকসা অঞ্চল বিজয় করবে। হযরত ওমার (রা.) এর শাসনামলে শাম অঞ্চলে যে সেনাবাহিনী প্রেরণ করা হয়, তার নেতৃত্বে ছিলেন মহাবীর খালিদ ইবনু ওয়ালিদ (রা.), যিনি জীবনে কোন যুদ্ধে পরাজিত হননি।

শামের একটি অঞ্চল বিজয় লাভের পর হঠাৎ করেই হযরত ওমার রা. খালিদ ইবনু ওয়ালিদকে সেনাপতির পদ থেকে সরিয়ে দিলেন এবং নতুন সেনাপতি হিসেবে আবূ উবাইদাহ ইবনুল জাররাহ রা.-কে নিয়োগ দিলেন। আর তার নেতৃত্বেই মুসলিম সেনাবাহিনী আল-কুদস শহর, বায়তুল মাকদাস, আল-আকসা মাসজিদসহ ফিলিস্তিন বিজয় লাভ করেন। মুসলিম একজন সাধারণ সৈনিক হিসেবে খালিদ ইবনুল ওয়ালিদ রা. এ যুদ্ধের সৌভাগ্যবান সদস্য ছিলেন। মুসলিম সেনাবাহিনীতে এটি একটি বদ্ধমূল ধারণা জন্ম নিয়েছিল যে, খালিদ ইবনু ওয়ালিদ নেতৃত্বে থাকলে বিজয় সুনিশ্চিত-এই থিম ভেংগে দেন ওমার রা. নেতৃত্ব পরিবর্তনের মাধ্যমে। বিজয়দান করেন আল্লাহ তা’আলা এবং সেটি কোন সংখ্যা ও ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভর করে না। বিজয়ী সেনাপতি আবূ উবাইদাহ রা.-কে স্মরণ করেই কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র এর নিক নেইম রাখা হয়েছে আবূ উবাইদাহ।

তুফান আল-আকসা (আল-আকসা ঝড়) শুরু হয় ৭ অক্টোবর ২০২৩ খ্রি. বহুদিনের অবরুদ্ধ গাযযাহবাসীর মুক্তির আশায়। ঐদিনের তাণ্ডব ছিল যুলুম নির্যাতনের ধূমায়িত আগ্নেয়গিরীর লাভার বিস্তারণ। মটর চালিত প্যারাসুটে উড়ে অভিনব পন্থায় কাটা তারের বেড়া ডিঙ্গিয়ে হামাস সদস্যরা পৌছে যায় ইসরাইলী ভূ-খণ্ডে এবং শত শত ইসরাঈলীকে পরপারে পাঠিয়ে আড়াই শতাধিক বিভিন্ন দেশের নাগরিকসহ ইসরাঈলীদেরকে নিয়ে যায় তাদের কারাগার সদৃশ গাযযাহর সুরঙ্গ টানেলে। দু’দফায় বন্দি বিনিময় হলেও নারী শিশু ও সাধারণ ইসরাঈলীসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকদের মুক্তি দিলেও ইসরাঈলী সেনাবাহিনীর কোন সদস্যকে হামাস মুক্তি দেয়নি।

ইসরাঈলের সরকারী হিসেব মতে এখনও ১৪৩ জন বন্দী/নিখোজ রয়েছে। বাইডেনের পরামর্শে সুরঙ্গ পথে সমুদ্রের লোনা পানি ঢুকিয়ে হামাসের লুকানো অবস্থা থেকে বের করে আনার ইসরাঈলী কৌশল ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয় যখন ইসরাঈলী সৈন্যদের লাশ সুরঙ্গ পথে ভেসে আসা শুরু করে। তেলআবিব স্বীকার করছে গাযযায় স্থল অভিযানে তাদের অনেক কমান্ডারসহ ১৬৮জন সেনা সদস্য মারা গেছে। ৭ অক্টোবরের হামলায় বেসামরিক ১৩০০ ইসরাঈলীর মৃত্যু ঘটেছে বলে তাদের দাবী।

গোপন সূত্রে প্রকাশ গাযযায় ইসরাঈলীদের মৃত্যু সংখ্যা ৮৪৩৫, আমেরিকান ১৩৮৫, ফ্রান্সের ৯০২, বৃটেনের ৭৯, ইটালীর ৪৮জন এবং ৬২জন হিন্দু ও অন্যান্যরা। (হাইওচা অফিসিয়াল)।

গাযযার হেলথ এডমিনিস্ট্রেশন জানিয়েছে, বিশ হাজারের অধিক সাধারণ মানুষ শহীদ হয়েছেন যার ৭০% নারী ও শিশু। হামাস দাবী করেছে, তারা এক হাজারের উপর ইসরাঈলী ট্যাংক ও সামরিক সাজোয়া যান ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে এবং বহু সেনা সদস্যকে পরপারে পাঠিয়ে দিয়েছে।

বিশ্বের সর্বাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের মালিক, আট লক্ষ সুসজ্জিত সেনা সদস্য তার উপর বিশ্ব মোড়ল আমেরিকার যুদ্ধ জাহাজ থেকে ও সামরিক ঘাটি থেকে সরাসরি সহযোগিতা প্রদান ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটা ভূ-খণ্ড মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েও হামাস নামক বিস্ময়কর ইসলামী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের নাগাল পাওয়া সম্ভব হয়নি।

আকাশ পথে বিমান হামলা চালিয়ে পশ্চিম তীরের সাধারণ নাগরিকদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলা হয়েছে, শত শত মুসলিমকে তারা কবরে পাঠাচ্ছে, কিন্তু এতেও নিতানিয়াহু বা বাইডেনের রক্ত পিপাসা মিটছে না। অন্য যে কোন দেশ গাযযার সহযোগিতা করলে সে দেশকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে ইসরাঈলের গডফাদার যুক্তরাষ্ট্র। আরব শাসকবর্গ বসে আছে কখন পশ্চিমা বিশ্ব যুদ্ধ বন্ধে ইসরাঈলকে রাজি করাবে।

হামাসকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছে, আপনারা ধনাঢ্য আরব রাষ্ট্রগুলোকে বার বার অনুরোধ করছেন গাযযার সাধারণ জনগণকে বাচানোর জন্য, মানবিক সাহায্য প্রদানের, কিন্তু আরব শাসকদের নিকট সামরিক সহযোগিতা চাচ্ছেন না কেনো? হামাসের সাফ জবাব: আরব শাসকবৃন্দ কেউ বেচে নেই, সবাই মৃত। আর মৃতদের কাছে সাহায্য চাওয়া শিরক। কাজেই হামাস তাদের কোন সহযোগিতা চাইতে পারে না। আরব জনগণ যেহেতু গাযযার প্রতি দয়াশীল, সেহেতু তাদের কাছে মানবিক সহায়তার আবেদন জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক আদালত, নিরাপত্তা পরিষদ, মানবাধিকার সংস্থা-এসব মূলত আরব বিশ্বের সাথে আন্তর্জাতিক আইন মাধ্যমে হাসে তামাশা করছে, যাতে পাশ্চাত্য আরব ভূ-খণ্ড দখল করতে পারে, তাদের সম্পদ লুট করতে পারে, তাদের জাতি-গোষ্ঠীকে নিধন করতে পারে। নিরাপত্তা পরিষদে ভেটো পাওয়ারের অধিকারী যে কোন রাষ্ট্র ভেটো দিলেই আর কোন বিধান কার্যকর হতে পারবে না । এ ধরনের ঠুটো জগন্নাথ জাতিসংঘ দিয়ে মাযলুমের পক্ষে কোন ভূমিকা রাখা সম্ভব নয়। মুসলিম বিশ্বকে এ সংস্থা থেকে বেরিয়ে এসে নিজেদের সমাধানে নিজেদেরকেই অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে মুসলিম জাতিসংঘ গড়ে তোলার-এটাই বর্তমান সময়ের মুখ্য দাবী ও একমাত্র বিকল্প। আল্লাহ মুসলিম শাসকবর্গকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রত্যেকের অবস্থান থেকে জোড়ালো ভূমিকা রাখার তৌফিক দাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *